নওগাঁর ধামইরহাটে ইউএনও‘র বিরুদ্ধে গর্ভবতী নারীকে মারধরের অভিযোগটি মিথ্যা

নওগাঁর ধামইরহাটে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহরিয়ার রহমান এবং পৌর প্রকৌশলী আবদুর সালামের বিরুদ্ধে স্থানীয় এক গর্ভবতী নারীকে মারধর ও শ্লীলতাহানির যে গুরুতর অভিযোগ উঠেছিল, তা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট মহল থেকে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে জোরালোভাবে দাবি করা হয়েছে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, স্থানীয় একটি মহল নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য পরিকল্পিতভাবে এই অভিযোগ ছড়িয়ে দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে। প্রশাসনের বক্তব্য: অভিযোগ ভিত্তিহীন উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলকোঠা আবাসিক এলাকায় পৌর সভার ময়লা ফেলাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ভুল বোঝাবুঝি ও সামান্য বাকবিতণ্ডাকে পুঁজি করে এই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার রহমান তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে গর্ভবতী নারীকে মারধর এবং লাথি মারার যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি ঘটনাস্থলে পরিবেশ শান্ত করতে এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়েছিলাম।

পৌরসভার লোকজনের সঙ্গে স্থানীয়দের কথা কাটাকাটি হচ্ছিল। আমি বা আমার কোনো স্টাফ কাউকে শারীরিকভাবে আঘাত করিনি। এটি আমার এবং প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার একটি পরিকল্পিত চক্রান্ত।”তিনি আরও বলেন, ঘটনার দিনই প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয় এবং সেখানে মারধরের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।

মারধরের নাটক সাজিয়ে সুবিধা নিতে চেয়েছিল একটি পক্ষ। স্থানীয়দের একাংশের সমর্থন ঘটনার পর পরই প্রশাসনের পক্ষ নেওয়া স্থানীয় একটি অংশও দাবি করেছে, মারধরের ঘটনাটি অতিরঞ্জিত এবং ইউএনও’র বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।

তাঁরা জানান, সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু গর্ভবতী নারীর ওপর হামলা বা পেটে লাথি মারার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। একটি মহল নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থে পরিস্থিতি ঘোলাটে করেছে। জেলা প্রশাসকের আশ্বাস ও তদন্তের ফলাফল জেলা প্রশাসক আব্দুল আউয়াল পূর্বেই এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন।

তদন্ত শেষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্যে ইউএনও বা পৌর প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মারধরের সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পুরো ঘটনাটি ছিল পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে প্রশাসনের ভুল বোঝাবুঝি যা পরে একটি মহল রাজনৈতিক রঙ দিয়ে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে।

প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মনে করছেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং কর্মকর্তাদের মানহানি করার উদ্দেশ্যে এই মিথ্যা অভিযোগটি আনা হয়েছে।

মিথ্যা প্রচারণার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা ইউএনও শাহরিয়ার রহমান এই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ ছড়িয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, যারা প্রশাসনের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এবং মিথ্যা তথ্য প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াতে চেয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ধামইরহাট উপজেলা প্রশাসন এখন মঙ্গলকোঠা আবাসিক এলাকায় সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি স্থায়ী সমাধান করার উদ্যোগ নিয়েছে।