শেরপুর-ঢাকা রুটে বাস চলাচল বন্ধ, চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা

পরিবহন শ্রমিক গ্রেফতারের প্রতিবাদে শেরপুর থেকে ময়মনসিংহ ও ঢাকাগামী সব বাস চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে। রবিবার (১২ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হওয়া এই ধর্মঘটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ময়মনসিংহ, গাজীপুর ও ঢাকামুখী হাজারো যাত্রী।

ধর্মঘটের কারণে সকাল থেকেই শেরপুর পৌর বাস টার্মিনাল ছিল কার্যত ফাঁকা। টার্মিনালে এসে অনেক যাত্রী বাস না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ বিকল্প যানবাহনের খোঁজ করছেন। বিশেষ করে ময়মনসিংহ, ভালুকা, জয়দেবপুর ও গাজীপুরগামী যাত্রীরা পড়েছেন সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে।

তবে শেরপুর থেকে টাঙ্গাইল হয়ে কিছু বাস ছেড়ে যাওয়ায় ভোগান্তি কিছুটা কমেছে বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা। ধর্মঘট অব্যাহত থাকলে শেরপুর থেকে ঢাকাগামী নাইটকোচগুলোর চলাচলও বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন টিকিট বিক্রেতারা। এতে রাতের যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে, কারণ প্রতিরাতে শেরপুর থেকে অন্তত অর্ধশত বাস ঢাকায় যাতায়াত করে।

ঢাকাগামী যাত্রী আরিফ মিয়া বলেন, “পূজার ছুটি শেষে ঢাকায় ফেরার জন্য টার্মিনালে এসে দেখি বাস বন্ধ। এখন বিপাকে পড়েছি। আজই ঢাকায় না পৌঁছাতে পারলে অফিসে সমস্যা হবে।”

শিক্ষার্থী অর্ণব বলেন, “যখন তখন গাড়ি বন্ধ করলে আমরা যাতায়াত করব কিভাবে? সময়মতো পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না, এটা খুব কষ্টদায়ক।” একই কথা জানান রাসেল মিয়া, শাহিদা বেগমসহ আরও কয়েকজন যাত্রী।

এ বিষয়ে জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ শওকত হোসেন বলেন, “আমরা ময়মনসিংহ বাস মালিক সমিতি ও সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে শেরপুর থেকে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছি। শ্রমিক গ্রেফতার ও লাঞ্ছনার বিচার না হলে সারাদেশেই বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে।”

জেলা বাস-কোচ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুজিত ঘোষ বলেন, “ময়মনসিংহের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে সকাল থেকে শেরপুর-ঢাকাসহ দূরপাল্লার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এটি ময়মনসিংহ মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করা হয়েছে।”

উল্লেখ্য, ময়মনসিংহে গত শুক্রবার জুলাই যোদ্ধা আবু রায়হানের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিক অরুণ ঝন্টুর বাকবিতণ্ডা ও অশালীন আচরণের জেরে অরুণকে আটক করে পুলিশ। এরপর থেকেই ময়মনসিংহে বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয় পরিবহন শ্রমিকরা, যা পরবর্তীতে ছড়িয়ে পড়ে শেরপুরসহ ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায়।