খাগড়াছড়িতে শহীদ মিটন চাকমার আত্মবলিদানের ১বছর উপলক্ষে স্মরণসভা ও প্রদীপ প্রজ্বলন

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাতে শহীদ মিটন চাকমার আত্মবলিদানের ১বছর উপলক্ষে স্মরণসভা ও প্রদীপ প্রজ্বলন করেছে। “শত শহীদের আত্মবলিদানে বলীয়ান পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের লড়াই জয়যুক্ত হবেই” এই স্লোগানে ইউপিডিএফের তরুণ সংগঠক ও সাবেক ছাত্রনেতা শহীদ মিটন চাকমার আত্মবলিদানের ১বছর উপলক্ষে স্মরণ সভা ও প্রদীপ প্রজ্বলন করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) খাগড়াছড়ি জেলা শাখা।

সোমবার (১০ নভেম্বর ২০২৫) বিকেল ৫টার সময় আয়োজিত এ স্মরণসভা ও প্রদীপ প্রজ্বলন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পিসিপি’র খাগড়াছড়ি জেলা শাখার পিসিপি’র সভাপতি মিঠুন চাকমা ও সঞ্চালনা করেন সহ-সাধারণ সম্পাদক নয়ন চাকমা।

অনুষ্ঠান শুরুতে শহীদ মিটন চাকমাসহ এযাবৎকালে পার্বত্য চট্টগ্রামে নিপীড়িত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যাঁরা শহীদ হয়েছেন সকল বীর শহীদের স্মরণে দাঁড়িয়ে ১মিনিট নিরাবতা পালন করা হয়।

স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন, ইউনাইটেড পিপলস্ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর খাগড়াছড়ি ইউনিয়নের সংগঠক লালন চাকমা ও পিসিপির খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক প্রাঞ্জল চাকমা।

লালন চাকমা বলেন, এক বছর আগে আজকের এই দিনে মিটন শহীদ হবে আমরা ভাবতেও পারিনি। তার সাথে আমার ছোটকালে দেখা হয়। তখন সে প্রাইমারিতে পড়ত। সে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার সময় লড়াকু ছাত্র সংগঠক পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষে নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের হয়ে কাজ করার জন্য ইউপিডিএফ-এ যোগ দেয়। শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে পাহাড়ের শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে আজ সে শহীদ হয়েছে। যাঁরা জাতির জন্য জীবন দেন তারা অমর।

পাহাড়ে নিপীড়িত মানুষের মনে গেঁটে থাকবেন আজীবন।
পিসিপি নেতা প্রাঞ্জল ও মিঠুন চাকমা বলেন, চীনের বিপ্লবী নেতা মাও সেতুং বলেছেন, “কিছু মানুষের মৃত্যু বেলে হাঁসের পালকের চেয়েও হালকা, বিপ্লবীদের মৃত্যু পাহাড়ের চেয়েও ভারী।” আজ কমরেড মিটন চাকমার মৃত্যুও তাই।

শাসকগোষ্ঠী মিটন চাকমাকে হত্যা করলেও তার চেতনা ও আদর্শকে হত্যা করতে পারেনি। মিটন চাকমার আদর্শ ধারণ করে আমাদেরকে মিটন চাকমা হয়ে উঠতে হবে। পাহাড়কে ধ্বংস করার জন্য উদীয়মান তরুণ নেতৃত্বকে হত্যা করার চেষ্টা করছে শাসকগোষ্ঠী। শাসকগোষ্ঠীর এই ষড়যন্ত্রের বাঁধ ভেঙে ফেলতে হবে তরুণ ছাত্র সমাজকে।

স্মরণ সভা শেষে মিটন চাকমার প্রতিকৃতির সামনে মোমবাতি প্রজ্বলনলন করা হয়। এতে উপস্থিত ছাত্র জনতা প্রজ্বলিত মোমবাতি হাতে নিয়ে মিটন চাকমার উদ্দেশ্য “এক মিটন লোকান্তরে, লক্ষ মিটন পাহাড়ে কোলে, আজকের এই দিনে মিটন তোমায় মনে পড়ে, মিটন চাকমার রক্ত বৃথা যেতে দেবোনাৃ” ইত্যাদি শ্লোগান দেন। অনুষ্ঠানে এলাকার শিশু-কিশোররাও স্বস্পুর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।