শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত, রাঙামাটিতে হরতাল প্রত্যাহার

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোটা বৈষম্য ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে হরতাল পালন করেছিল তিনটি সংগঠন। তাদের ডাকা হরতালের মুখে চাকরিপ্রত্যাশীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আগামীকাল শুক্রবারের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেছে জেলা পরিষদ।

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষনা দেন রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার। অপরদিকে পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্তে বেলা ২টার দিকে হরতাল প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় ওই তিন সংগঠন। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ৩৬ ঘণ্টার জন্য এ হরতাল ডাকা হয়েছিল।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার বলেন, ‘শুক্রবার জেলা পরিষদের নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও হরতাল ডাকার কারণে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে আসা-যাওয়াসহ সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে পরীক্ষার তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।’

এর আগে বুধবার বিকাল ৩টায় কোটাবিরোধী ঐক্যজোট, সাধারণ শিক্ষার্থী ও সচেতন নাগরিকবৃন্দ নামের তিনটি সংগঠন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল। শনিবার জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে এ কর্মসূচি ডাকা হয়েছিল। হরতাল সমর্থনকারীরা এ পরীক্ষা স্থগিতের দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি এ পরীক্ষায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটা বাতিলের দাবি করেছেন তারা।

সংগঠনের অন্যতম নেতা নুরুল আলম বলেন, ‘শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়টিকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে আমরা শনিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করবো, আমাদের যে ছয় দফা দাবি ছিল, তার বিষয়ে জেলা পরিষদ সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত জানাবে। আজ বেলা ২টা থেকে হরতাল প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছি আমরা।’

কোটাবিরোধী ঐক্যজোটের নেতা ইমাম হোসেন ইমু জানান, জেলা পরিষদ ৭০ শতাংশ পাহাড়ি ও ৩০ শতাংশ বাঙালি এই কোটা মেনে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে যাচ্ছিল। এটি চরম বৈষম্য। এই বৈষম্যের প্রতিবাদে আমরা হরতাল ডেকেছি।

রাঙামাটির সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল সমর্থন করেছেন। পরে পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় আমরাও কর্মসূচি স্থগিত করেছি। তবে এই বৈষম্যের প্রতিবাদে জেলা পরিষদের কাছে ছয় দফা দাবি জানানো হয়েছে। সেটি পূরণ না হলে পরবর্তীতে কর্মসূচি দেওয়া হবে।

এ নিয়ে এই নিয়োগ পরীক্ষা চারবার স্থগিত হয়েছে। এর আগে ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সালের ২১ মে, ২০২৫ সালের ১১ নভেম্বর এবং সবশেষ পরীক্ষার একদিন আগে স্থগিত করা হয়েছে।

জেলা পরিষদ সূত্র জানায়, ২০২২ সালে জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ৪৬২টি শূন্য পদের বিপরীতে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল জেলা পরিষদ। পরে চলতি বছরের ২৭ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় আবার এসব পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে এসব পদের বিপরীতে আবেদন করেন প্রায় সাত হাজার চাকরিপ্রত্যাশী।