অনেক নাটকীয়তার পর গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন স্পেন

স্নায়ুরও বুঝি একটা সহ্য ক্ষমতা আছে। স্পেন-মরক্কো ম্যাচে স্নায়ুর এতটা পরীক্ষা নিল যে, সেটা অবিশ্বাস্য। কালিনিনগ্রাদে ক্ষণেক্ষণে ম্যাচের রঙ বদলেছে। ম্যাচের পাল্লাও দুলেছে দু’দিকে। কখনও মরক্কো, তো আবার কখনও স্পেনের দিকে। তবে, পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে, ম্যাচে মরক্কোই ছিল সবচেয়ে এগিয়ে। না, বল পজেশনে নয়। গোল দেয়ার দিক থেকে। কারণ, দু’বারই গোল দিয়ে এগিয়ে গিয়েছিল মরক্কো এবং দু’বারই গোল পরিশোধ করে সমতা ফিরিয়েছে স্পেন।

শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলে মরক্কোর সঙ্গে ড্র করতে হলো স্পেনকে। শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে শেষ মুহূর্তে স্পেনকে গোল করে বাঁচিয়েছেন আসপাস। ২-২ গোলে ড্র করার কারণেই ‘বি’ গ্রুপ থেকে ২-২ গোলে ড্র করে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছে স্পেন।

প্রথম ম্যাচেই পর্তুগালের সঙ্গে ৩-৩ গোলে ড্র করে বিশ্বকাপের শুরুতে নিজেদের পথচলাটা কঠিন করে ফেলে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেন। যদিও পরের ম্যাচে ইরানের বিপক্ষে দিয়েগো কস্তার একমাত্র গোলে নিজেদের বিশ্বকাপে টিকিয়ে রাখে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তারা। মরক্কোকে হারাতে পারলে কিংবা ড্র করলেও দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত হয়ে যাবে স্পেনের।

কালিনিনগ্রাদে শুরু থেকেই প্রভাব বিস্তার করে খেলতে থাকে স্পেন। আক্রমণের পর আক্রমণ। মুহুর্মুহু আক্রমণে ব্যস্ত রাখে মরক্কোর রক্ষণভাগ। কিন্তু ১৪ মিনিটেই ধারার বিপরীতে গোল খেয়ে বসে স্পেন। যদিও ১৯ মিনিটে সেই গোল শোধ করে কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ৮১ মিনিটে গোল করে আবারও মরক্কো এগিয়ে যায়। ইনজুরি সময়ে (৯০ + ১ মিনিটে) সমতায় ফেরে স্পেন।

খেলার ১৪ মিনিটেই ডিফেন্ডারদের অমার্জনীয় ভুলে গোল খেয়ে বসে স্পেন। ম্যাচের শুরুতেই বলতে গেলে ব্যাকফুটে। অথচ, তখনও পর্যন্ত ৭৫ ভাগ বল পজেশন ছিল স্পেনের দখলে। মাঝ মাঠে সার্জিও রামোসের কাছ থেকে বল কেড়ে নেন খালিদ বোতাইব। সামনে আর কেউ নেই।

বোতাইবের গতির সঙ্গেও যেন কেউ পেরে ওঠার জো নেই। উসাইন বোল্টের চেয়েও বেশি গতিময় হয়ে উঠেছেন তিনি। সামনে শুধু গোলরক্ষক ডি গিয়া। পেছন পেছন জেরার্ড পিকে দৌড়ে এলেন। কিন্তু পৌঁছাতে পারলেন না। বোতাইব নিলেন বুদ্ধিদীপ্ত শট। ডি গিয়ার দুই পায়ের ফাঁক গলে সোজা বল জড়িয়ে গেলো স্পেনের জালে।

গোল হজম করার পর সেটা শোধ করতে বেশি সময় নিল না স্পেন। ১৯তম মিনিটে টিপিক্যাল স্প্যানিশ আক্রমণ। ইসকো আর ইনিয়েস্তার সম্মিলিত প্রচেষ্টা। কিন্তু ডি বক্সের মধ্যে একেবারে পোস্টের সামনে মরক্কোর পার্ক করা বাস ফাঁকি দিয়ে গোলের বলটি অসাধারণভাবে বানিয়ে দিলেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা।

গোলের বাম পাশ থেকে হালকা ব্যাকপাস ছিল ইনিয়েস্তার। পোস্টের সামনে পেয়ে যান ইসকো। বলটি থামিয়ে ডান পায়ের দারুণ এক প্লেসিং শর্ট। সঙ্গে সঙ্গেই জড়িয়ে গেলো জালে। ১-১ সমতায় ফিরলো স্পেন।

প্রথমার্ধের একেবারে শেষ মুহূর্তে, ইনজুরি সময়ের ২য় মিনিটে গোলের দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন দিয়েগো কস্তা। কিন্তু পোস্টের সামনে তিনি শুধু বলে পা লাগাতে ব্যর্থ হলেন। না হয়, প্রথমার্ধেই এগিয়ে যেতে পারতো স্প্যানিশরা।