অবহেলায় নষ্ট হতে চলেছে যশোরের কেশবপুরে মৎস্য আহরণোত্তর পরিচর্যা কেন্দ্র
যশোরের কেশবপুর শহরের পাইকারি মাছ বাজারে নির্মিত মৎস্য আহরণোত্তর পরিচর্যা কেন্দ্রটি বর্তমান দেখভালের অভাবে ভেঙে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
গত ২ বছরেও পরিচর্যা কেন্দ্রটি চালু না হওয়ায় সরকারের গর্চা যেতে বসেছে ৩০ লাখ টাকা। মৎস্যজীবীরা সংশ্লিষ্ট ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে জরুরীভাবে মৎস্য আহরণোত্তর কেন্দ্রটি পুণসংস্কারসহ চালুর দাবি জানিয়েছেন।
কেশবপুর উপজেলায় ৪ হাজার ৬‘শ ৫৮টি মাছের ঘের ও হাজার হাজার পুকুরে প্রতিবছর লাখ লাখ মেট্রিকটন মাছ উৎপাদন হয়। এসব মাছ কেশবপুরের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রফতানী হয়। এ পেশায় জড়িয়ে হাজার হাজার মানুষ জীবন জীবিকা নির্বাহ করেন। একথা বিবেচনা করে সরকার মাছের অভয়ারণ্য সৃষ্টি, উৎপাদিত মাছ ধুয়ে, মুছে পরিস্কার করে প্যাকিং ও বাজারজাত করার উদ্দেশ্যে সরকার কেন্দ্রটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এ লক্ষ্যে মৎস্য অধিদপ্তরের আওতায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে এক তলা বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। ২ বছর আগে ঠিকাদার কাজ সমাপ্ত করে চলে গেলেও উদ্বোধনের অভাবে তা ভেঙেচুরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে মৎস্য আহরণোত্তর পরিচর্যা কেন্দ্রটি পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, বর্তমান ওই ঘরটি মোটরসাইকেল, অটোভ্যান, নসিমন রাখার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ভবনের দু‘পাশের সিঁড়ির টাইলস ও মেঝের টাইলস ভেঙে নষ্ট হয়ে গেছে। এ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হলেও কোন অভিভাবক না থাকায় সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করায় সন্ধ্যায় ভুতুড়ে পরিবেশের সৃষ্টি হয়। গভীর রাতে এখানে মাদকের কার্যকলাপ চলে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এ অবস্থায় মৎস্য আহরণোত্তর পরিচর্যা কেন্দ্রটি চালু না হলে সরকারের আসল উদ্দেশ্যই ব্যাহত হবে।
কেশবপুর মাছ বাজার মৎস্য আড়ৎদার সমিতির সভাপতি আব্দুল হান্নান বিশ্বাস বলেন, পাইকারি মাছ বাজারে ২৩ জন আড়ৎদার রয়েছেন। একাজে আড়তে ৪ শতাধিক শ্রমিক কর্মরত আছে। প্রতিদিন আড়ৎগুলোই ৮৪ থেকে ৮৫ মেট্রিকটন মাছ আমদানী ও রফতানী হয়। মাছ ক্রেতাদের মাছ রাখার সুবিধার্তে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল।
তিনি অভিযোগ করেন, ভবনটি নির্মাণকালে কাউকে অবহিত করা হয়নি। ঠিকাদার তার ইচ্ছামত কাজ করে চলে গেছেন। আজও তা হস্তান্তর না হওয়ায় মাছ ব্যবসায়ীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে। অবহেলায় এ অবকঠামোর অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপণা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর অভিভাবক না থাকায় বিদুৎ বিল দেয়ার অভাবে কর্তৃপক্ষ ইতোপূর্বে মিটার খুলে নিয়ে গেছে। আমাদের আড়ৎদার সমিতিকে দায়িত্ব বুঝে দিলে সবকিছু দেখভাল করা সম্ভব হতো।
কেশবপুর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা এসএম আলমগীর কবীর বলেন, জেলা মৎস্য অফিসের তত্তাবধানে কাজটি করা হয়েছিল। ভবন নির্মাণে কত টাকা বরাদ্দ ছিল তাও আমাদের জানা নেই।
এ ব্যাপারে যশোর জেলা মৎস্য অফিসার আনিসুর রহমান বলেন, ২০১৯ সলে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে মৎস্য আহরণোত্তর পরিচর্যা কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়। ঠিকাদার কাজ বুঝে দিয়ে গেছে। শিঘ্রই উদ্বোধন করে কাজ শুরু করা হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন