অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন যুক্তরাষ্ট্রের ৩ অধ্যাপক

চলতি বছর অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অধ্যাপক তুর্কি বংশোদ্ভূত আমেরিকান ড্যারন আসেমোগলু, একই প্রতিষ্ঠানের সাইমন জনসন এবং ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো, ইলিনয়ের অধ্যাপক জেমস এ রবিনসন।

সোমবার (১৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টা ৪৫ মিনিটে দ্য রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্স তার নাম ঘোষণা করে।

নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, কেন দেশগুলোর মধ্যে সমৃদ্ধিতে এত বিশাল পার্থক্য বিদ্যমান-এই বিষয়ে চলতি বছরের নোবেল বিজয়ীরা নতুন অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করেছেন। তারা দেখিয়েছেন-এ ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা হলো সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যকার ব্যাপক পার্থক্য। ইউরোপীয় উপনিবেশিক দেশগুলোর প্রবর্তিত বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পরীক্ষা করে ড্যারন আসেমোগলু, সাইমন জনসন এবং জেমস রবিনসন প্রতিষ্ঠান ও সমৃদ্ধির মধ্যকার সম্পর্ক বের করতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁদের তাত্ত্বিক উপাদানগুলো ব্যাখ্যা করেছে, কেন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্য বজায় থাকে এবং কীভাবে প্রতিষ্ঠানগুলো পরিবর্তন আনতে পারে।

গত বছর অর্থনীতিতে নোবেল জেতেন মার্কিন অর্থনীতিবিদ ক্লাউডিয়া গোলডিন। শ্রমবাজারে নারী অংশগ্রহণের ফলাফল সম্পর্কে বোঝাপড়ার উন্নতিতে অবদান রাখার জন্য তাকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। আক্ষেপের বিষয় হলো- তিনি যেদিন পুরস্কার গ্রহণ করেন, সেদিন খুব অল্পসংখ্যক নারীই উপস্থিত ছিলেন। ১৯৬৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৯৩ জনকে নোবেল দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ক্লডিয়া গোল্ডিনসহ নারী মাত্র তিনজন। বাকি দুজন হলেন এলিনর অস্ট্রোম ও এস্তার দুফলো।

এর আগে, চলতি বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছে জাপানে পরমাণু বোমা হামলায় জীবিতদের নিয়ে গড়ে ওঠা পরমাণু অস্ত্রবিরোধী সংগঠন নিহন হিদাঙ্কিও। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে বোমার আঘাত থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষকে নিয়ে সোচ্চার তৃণমূল সংগঠনটি স্থানীয়ভাবে ‘হিবাকুশা’ নামেও পরিচিত। গত বছর শান্তিতে নোবেল পেয়েছিলেন ইরানের কারাবন্দী মানবাধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদি। দেশটিতে নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে তাঁর লড়াইয়ের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে এই সম্মানে ভূষিত করা হয়।

এদিকে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত শান্তি ছাড়াও চিকিৎসা, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার লেখক হান কাং। ‘প্রগাঢ় কাব্যিক গদ্যে ঐতিহাসিক ক্ষত তুলে ধরা এবং মানবজীবনের নাজুক পরিস্থিতির উন্মোচনের জন্য’ তাকে বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাবান পুরস্কারের জন্য বেছে নিয়েছে নোবেল কমিটি।

চলতি বছর রসায়নে নোবেল বিজয়ী হয়েছেন তিন বিজ্ঞানী। তারা হলেন ডেভিড বেকার, ডেমিস হাসাবিস ও জন এম জাম্পার। প্রোটিনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করার কারণে তাঁদের এ বছর নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। এ ছাড়া কৃত্রিম ‘নিউরাল নেটওয়ার্কের সাহায্যে মেশিন লার্নিংকে সক্ষম করে তোলার’ মৌলিক আবিষ্কারের জন্য এ বছর পদার্থে নোবেল পেয়েছেন এআই গডফাদার হিসেবে পরিচিত জিওফ্রে হিনটন ও জন হপফিল্ড।

তার আগের দিন চিকিৎসায় নোবেল জেতেন ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকুন। মাইক্রো-আরএনএ আবিষ্কার এবং পোস্ট-ট্রান্সক্রিপশনাল (জিনের প্রতিলিপির পর) জিন নিয়ন্ত্রণে মাইক্রো-আরএনএর ভূমিকা আবিষ্কারের জন্য যৌথভাবে তাঁদের এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।