অস্ট্রিয়ায় মসজিদ বন্ধ ও ইমাম বহিষ্কার নিয়ে যা বলছে তুরস্ক

অস্ট্রিয়াতে বিদেশী অর্থায়নে চলা ৭টি মসজিদ বন্ধ ও ৬০ জন ইমামদের বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের অভিযোগ, এসব মসজিদে ইসলাম নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে।

শুক্রবার এই বন্ধের ও বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার প্রধান চ্যান্সেলর সেবাস্তিায়ান কার্জ।

এদিকে অস্ট্রেলিয়ার উগ্র ডানপন্থী দল এফপিও এবং ওভিপি জোট সরকারের এমন সিদ্ধান্তের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে তুরস্ক।

শুক্রবার তুর্কি প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন বলেছেন, ‘অস্ট্রিয়ার এমন সিদ্ধান্ত ইসলামবিদ্বেষী ও বর্ণবাদী ও বৈষম্যমূলক।’ নিজের টুইটারে এমন মন্তব্য করে কালিন।

এদিকে অস্ট্রিয়ান চ্যান্সেলর সেবাস্তিয়ান কার্জ বলেন, ‘আমাদের দেশে রাজনৈতিক ইসলাম ও কট্টোরপন্থার জায়গা নেই। তিনি জানান, তদন্ত সাপেক্ষ এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’

জানা যায়, মসজিদগুলো তুরস্কের ইসলামিক কালচারাল অ্যাসোশিয়েশন অর্থায়নে চলছিলো। সরকার ২০১৫ সালের একটি আইনে মাধ্যেমে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এই আইনের মাধ্যেমে ধর্মীয় গোষ্ঠীদের বিদেশী অর্থায়ন গ্রহণ করতে পারবে না।

গত এপ্রিলের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে চ্যান্সেলর এইসব মসজিদ বন্ধের হুমকি দিয়েছিলো।

জানা যায়, ভিয়েনার এক মসজিদে তুর্কী পতাকা হাতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের এক ঘটনা তুলে ধরেছিল একদল শিশু। এই বিষয়টি নিয়েই অস্ট্রিয়ার সরকার ক্ষিপ্ত হয়।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় গ্যালিপলির লড়াইয়ের এক দিকে ছিল জার্মানি ও তৎকালীন অটোম্যান তুরস্ক আর অন্যদিকে মিত্র পক্ষ।

সেখানে তীব্র লড়াই চলে বহুদিন ধরে। শেষ পর্যন্ত এই লড়াইয়ে মিত্র পক্ষের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিতে সক্ষম হয় অটোম্যান বাহিনি। এই বিজয় এখনো উদযাপন করা হয় তুরস্কে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আধুনিক তুরস্কের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল বলে মনে করা হয়।

ঠিক এই ঘটনাটিকেই ভিয়েনার এক মসজিদে এক অনুষ্ঠানে ফুটিয়ে তুলেছিল একদল শিশু। সেখানে তারা সামরিক ইউনিফর্ম পরে তুর্কী পতাকা হাতে মিছিল করে।

এরপর যুদ্ধে গুলি খেয়ে মারা যাওয়ার ভান করে। এই অনুষ্ঠানের ছবি এবং খবর প্রকাশিত হওয়ার পর ভীষণ ক্ষুব্ধ অস্ট্রিয়ার ডানপন্থী সরকার।

এর আগে গত অক্টোবরে অস্ট্রিয়ায় মুসলিম মহিলাদের প্রকাশ্য স্থানে পুরো মুখ-ঢাকা নিকাব বা বোরকা পরা নিষিদ্ধ করা হয়।

সেবাস্টিয়ান কুর্জ গত ডিসেম্বরে অভিবাসন বিরোধি ফ্রিডম পার্টির সাথে কোয়ালিশন করে ক্ষমতায় আসে।