অ্যাম্বুলেন্সে সেনা সদস্য বাবার লাশ, স্তব্ধ রিফাত-রিতা
পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে পাহাড়ধসের ঘটনায় হতাহতদের উদ্ধার করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন সেনাবাহিনীর করপোরাল আজিজুল হক। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মগটুলা ইউনিয়নের তরফ পাছাইল গ্রামে।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) রাতেই স্বামীর নিহত হওয়ার খবর পান স্ত্রী আনোয়ারা বেগম। মৃত্যু সংবাদ শোনার সঙ্গে সঙ্গে মূর্ছা যান। তার দুই ছেলে মেয়ে বাবার জন্য আহাজারি শুরু করে। গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। স্বজন প্রিয়জনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে এলাকার বাতাস।
বুধবার (১৪ জুন) সরেজমিনে তরফ পাছাইল গ্রামে গিয়ে দেখা যায় নিহত সেনা সদস্য আজিজুল হকের লাশ দেখার জন্য শত শত মানুষ বাড়িতে ভিড় করেছে। সবার চোখেই পানি।
নিহত আজিজুলের একমাত্র ছেলে শাকিল আহামেদ রিফাত (১৫) ও মেয়ে শাহানা আজিজ রিতা। বাবার মৃত্যুতে তারা ভেঙে পড়েছে। তাদের আহাজারিতে উপস্থিত লোকজন চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না।
নিহতের ভাই আবুল হাসেম বলেন, আমার ভাই দূর্গত এলাকায় পাহাড় ধসে নিহতদের উদ্ধার কাজে গিয়ে জীবন দিয়েছে। এ জন্য আমরা গর্বিত। কিন্তু দুঃখ হয় দুটি অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তান রেখে তার আকাল মৃত্যু হলো। আবুল হাসেম আরো বলেন, ভাইয়ের স্বপ্ন ছিল ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া করিয়ে মেয়েকে ডাক্তার বানাবে। কিন্তু সে আশা আর পূর্ণ হলো না।
এক পর্যায়ে স্বাভাবিক হয়ে রিফাত ও রিতা জানায়, তার বাবা ২২ জুন ছুটিতে বাড়ি এসে তাদের নিয়ে ঈদের কেনা-কাটা করবেন বলে জানিয়েছিলেন। আজ বাবা বাড়ি ফিরছেন ঠিকই কিন্তু ফিরলেন লাশ হয়ে।
আজিজুল হকের স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকে একটি চাকরি ও সন্তানদের পড়ালেখার ব্যয় ভার গ্রহণ করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান স্বজনরা।
করপোরাল আজিজুল হক ৪ ভাই তিন বোনের মধ্যে তৃতীয় ছিলেন। ১৯৯৫ সালে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। তিন মাস আগে ঢাকা থেকে রাঙামাটি বদলি হন।
বুধবার দুপুরে ঢাকা সেনা সদর দপ্তরে প্রথম নামাজে জানাজা শেষে বিকেলে হেলিকপ্টারে নিহত সেনা সদস্য করপোরাল আজিজুল হকের মরদেহ ঈশ্বরগঞ্জ খেলার মাঠে আনা হয়। পরে সেনাবাহিনীর অ্যাম্বুলেন্সে লাশ গ্রামের বাড়ি তরফ পাছাইলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দ্বিতীয় জানাজার শেষে পারিবারিক গোরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন