আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ-যুবলীগকে নিষিদ্ধের ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালিয়ে হত্যা ও নির্যাতনের অপরাধে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগসহ তাদের সব অঙ্গ সংগঠনকে নিষিদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি থেকে এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ।

রাসেল আহমেদ বলেন, ‘যারা এ দেশের ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা চালিয়েছে, খুন করেছে, গুম করেছে তাদের এ দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। তাই আমরা শিক্ষার্থীরা এ চট্টগ্রাম থেকে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ স্বৈরাচারের সব দোসর সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করছি।’

এর আগে শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) মধ্যরাতে চট্টগ্রামের জামালখানে পতিত স্বৈরাচারের পক্ষে ছাত্রলীগের মিছিলের প্রতিবাদে আজ প্রেস ক্লাব চত্বরে এ বিক্ষোভের ডাক দেন শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভ থেকে ‌‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন ভারতে’, ‘খুনি হাসিনার দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘মুক্তিযুদ্ধের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’ স্লোগান দেওয়া হচ্ছে।

ছাত্রলীগ, চট্টগ্রাম, ছাত্র-আন্দোলন, প্রেসক্লাব, বিক্ষোভ, সমাবেশআওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ-যুবলীগকে নিষিদ্ধের ঘোষণা শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে অংশ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, ‘যারা জুলাই অভ্যুত্থানে আমাদের ওপর গুলি চালিয়েছে, আমাদের ভাই-বোনদের হত্যা করেছে। নির্বিচারে গুলি চালিয়েছ। আমরা দেখতে পাচ্ছি তারা এখনো অবাধে ঘোরাফেরা করছে। তারই ফলস্বরূপ আমরা দেখেছি তারা হাইকোর্টে খুনি হাসিনার পক্ষে স্লোগান দেয়। রাতের আঁধারে ছাত্রলীগ খুনি হাসিনার জন্য স্লোগান দেয়।

‘তারা ভেবেছিল আমরা ঘুমাইয়া গেছি, তারা বোঝেনি আমরা তাদের গর্ত থেকে বের হওয়ার সুযোগ দিয়েছি। আমরা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই। যারা এখনো খুনি হাসিনার পক্ষ নিয়ে, স্বৈরাচারের পক্ষ নিয়ে যারা জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত- তারা কোনো না কোনোভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।’- বলেন রাফি।

তিনি বলেন, ‘আমরা চাই দ্রুত তাদের খুঁজে বের করে বিষদাঁত ভেঙে দিতে। প্রশাসনের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে দ্রুত সময়ের মধ্যে যারা সন্ত্রাসী, জুলাই অভ্যুত্থানে হামলায় সরাসরি জড়িত তাদের গ্রেফতার করে যথাযথ শাস্তি দিতে হবে।’

এখনো শহীদের রক্তের দাগ শুকায়নি উল্লেখ করে খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, ‘যে চট্টগ্রামের মাটিতে শহীদ ওয়াসিম, শহীদ শান্ত এবং শহীদ হৃদয় তরুয়ার রক্ত লেগে আছে। সেই রাজপথে তারা স্লোগান দেওয়ার মত দুঃসাহস দেখিয়েছে। আমরা মনে করি এখানে প্রশাসনের ব্যর্থতা রয়েছে।’

এর আগে বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিকেল ৩টা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রেস ক্লাব চত্বরে সমবেত হতে থাকেন। বিকেল ৪টার দিকে প্রেস ক্লাব চত্বর ছাড়িয়ে জামালখান পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে সমাবেশ। বিক্ষোভে অংশ নেন অনেক নারী শিক্ষার্থীও।