আগস্টেই খুলছে দেশের দ্বিতীয় ইউলুপ
তিন বছরের ভোগান্তির অবসান ঘটিয়ে অবশেষে উদ্বোধনের অপেক্ষায় বাড্ডা ইউলুপ প্রকল্প। ইতোমধ্যে প্রকল্পটির ৯৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। চলতি মাসের শেষের দিকে অথবা আগামী মাসের প্রথম দিকে এটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প কর্মকর্তারা।
ইউলুপটি চালু হলে দীর্ঘ যানজটের ভোগান্তি কমার আশা করছেন এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারীরা।
রাজধানীর গুলশান থেকে হাতিরঝিল হয়ে রামপুরামুখী যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে মধ্যবাড্ডায় ইউলুপ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এই ইউলুপ নির্মাণ কাজের ধীর গতির কারণে সৃষ্ট যানজটের কারণে চলাচলকারীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
নির্মাণকাজের জন্য দুই লেনের গাড়িগুলোকে সরুপথে চলাচল করতে হয়েছে। ২০১৫ সালের মাঝামাঝিতে শুরু হওয়া বাড্ডা ইউলুপটির কাজ এখনো চলছে। তবে এটি চালু হলে যানবাহনগুলো প্রগতি সরণি হয়ে ইউলুপ দিয়ে বাঁক নিয়ে বনশ্রী, আফতাবনগর, রামপুরা বা মালিবাগ অভিমুখে সহজেই যাতায়াত করা যাবে। পাশাপাশি বাড্ডা পয়েন্টে সৃষ্ট যানজটেরও নিরসন হবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজউকের এই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৭ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটালিয়ন। নির্মাণকাজের দায়িত্বে আছে স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড। ইউলুপটির দৈর্ঘ্যে ৪৫০ ও প্রস্থ ১০ মিটার।
হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪০ কোটি টাকা। কিন্তু ২০১৫ সালের মাঝামাঝিতে শুরু হওয়া বাড্ডা ইউলুপটির কাজ চলছে কচ্ছপ গতিতে। কয়েক দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে কাজ শেষ না হওয়ায় এর প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ কোটি টাকা।
রাজউক সূত্রে জানা গেছে, বাড্ডা ইউলুপ চালু হলে যানবাহনগুলো প্রগতি সরণি হয়ে ইউলুপ দিয়ে ডানে বাঁক নিয়ে বনশ্রী, আফতাবনগর, রামপুরা বা মালিবাগ অভিমুখে সহজেই যেতে পারবে। একই সঙ্গে এয়ারপোর্ট, মেরুল বাড্ডা, শাহজাদপুর, গুলশান ও কুড়িল যাওয়ার জন্য রাস্তার লেনটিও হবে ইউটার্নমুক্ত। পাশাপাশি বাড্ডা পয়েন্টে সৃষ্ট যানজটেরও নিরসন হবে।
এ লক্ষ্যে হাতিরঝিল প্রকল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে ইউলুপ নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিল রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। সে অনুযায়ী কাজও শুরু হয়। কিন্তু তিন বছরেও ইউলুপের কাজ শেষ না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে নগরবাসীকে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ইউলুপের দুই প্রান্তের প্রবেশপথ বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। দুই পাশের র্যাম্পের কাজ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। মাঝখানের বক্সগুলো ঢালাই এবং ফিনিশিংয়ের কাজও প্রায় শেষের দিকে।
তবে ইউলুপ নির্মাণের ধীরগতির কারণে নিচের সার্ভিস রোডের অবস্থা বেহাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবড়োখেবড়ো রাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। বৃষ্টি হলে কাদামাটিতে সয়লাব হয়ে যায় এলাকা। ইউলুপের দুই পাশে স্তূপ করে মাটি রাখা হয়েছে, যেখানে সেখানে ছড়িয়ে আছে কংক্রিট এবং নির্মাণ সামগ্রী।
এই রুটে নিয়মিত যাতায়াত করেন রিয়াল হোসেন তিনি বলেন, নির্মাণ সামগ্রী যেখানে সেখানে ফেলে রাখায় সমস্য হচ্ছে এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছে। এখানে আমার মোটরসাইকেলে লোহা ঢুকে বেশ কয়েকবার টায়ার পাংচার হয়েছে। বর্ষার সময় কাদা-পানিতে বেহাল অবস্থা হয় এই সড়কে আর গরমে ধুলায় শ্বাস নেওয়াই কষ্ট হয়ে যায়।
এই রুটে চলাচলকারী গাড়িগুলোকে ইউলুপের নিচে পিলারের ফাঁকের সরু রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে দেখা গেছে। দুই পাশের গাড়ি এক লেনে চলতে গিয়ে বাঁধছে যানজট।
সকাল এবং বিকালের দিকে তীব্র যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকে গণপরিবহন। নতুন বাজার-পল্টন রুটে যাতায়াতকারী পরিবহনের চালকরা বলেন, ইউলুপের নিচের এই রাস্তায় অধিকাংশ সময় যানজট লাগে। রাস্তা এতটাই খারাপ যে অসতর্ক হলেই ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
এই বিষয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্রকল্প পরিচালক জামাল আক্তার ভূঁইয়া বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের ৯৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এখন মিডিয়ান, রেলিং ও রাস্তার কার্পেটিংয়ের কাজ বাকি আছে।
কাজের ধীরগতির ব্যাপারে তিনি বলেন, জমি অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে ইউলুপ নির্মাণে দেরি হয়েছে। তাছাড়া মাটির নিচে বিভিন্ন সেবা সংস্থার তার ছিল যা সরিয়ে নিতে সময় বেশি লেগেছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন