আজ থেকে শুরু হচ্ছে দুবলার চরের ঐতহ্যিবাহী রাসোৎসব

সাগরদীপ দুবলার চরের আলোরকোলে শত বছর ধরে উদযাপন হয়ে আসছে সনাতন র্ধমাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী রাসোৎসব। প্রতিবছর নভেম্বর মাসের পূরিœমা তিথিতে র্পূব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আলোরকোলে জাকজমকভাবে পালিত হয় এই উৎসব। তারই ধারাবাহকিতায় এবছর ১৪ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনের এই রাসোৎসব।

গত ১৭ অক্টোবর খুলনার বিভাগীয় বন র্কমর্কতার র্কাযালয়ে আন্তঃবিভাগীয় এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (এসিফ) মিহির কুমার দো।

বঙ্গোপসাগরের তীরে দুর্গম ও জনবিচ্ছিন্ন দীপ দুবলার চরের আলোরকোলে রাস উৎসব কবে থেেক পালতি হয়ে আসছে এ নিয়ে রয়েছে নানা মত। তবে এর সঠিক দিনক্ষণ পাওয়া না গেলেও ইতিহাস ঘেটে জানা যায়, শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের অনুসারী হরিভজন নামে এক সাধু ১৯২৩ সালে সুন্দরবনরে দুবলার আলোরকোলে প্রথম রাস র্পূণিমার পুজা শুরু করেন।

২৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই সাধু একা একা বনে অবস্থান করে পুজা উদযাপন করতেন। দুই যুগেরও অধিককাল বনের ফলমূল খেয়ে জীবনধারণ করেন তিনি। পরর্বতীতে তার সর্ম্পকে আর কিছু জানা যায়নি। এর পর থেকে সনাতন র্ধমের লোকেরা প্রতিবছর রাস র্পূণিমার পুজা পালনের জন্য ছুটে যায় র্দুগম বনে। সনাতনিদের এই রাস পুজা ধীরে ধীরে রাস মেলায় পরিনত হয়।

বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, সনাতন র্ধমের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বনবিভাগ ও রাসোৎসব উদযাপন কমিটির সহযোগিতায় প্রতিবছর এই দবিসটি পালিত হয়ে আসছে। এজন্য আলোরকোলে তৈরী করা হয় অস্থায়ী মন্দির। সেখানে গিয়ে মনোবাসনা পুরণের আশায় পুজা-র্আচনা করেন সনাতন ধর্মালম্বীরা। নিয়ে যান খাসি-মুরগিসহ মানতের নানা সামগ্রী।

এক সময় এই রাস মেলায় পূর্ণ্যাথী ও দেশি-বিদেশি র্দশর্নাথী মিলে লক্ষাধকি মানুষরে সমাগম হতো। কিন্তু এতো লোকরে আনাগোনা ও বাদ্যবাজনায় সংরক্ষতি বনের পরিবেশ-প্িরতবেশ এবং জীববৈচ্যিতের ওপর মারাত্বক বিরূপ প্রভাব দেখা দেয়। যে কারণে ২০২১ সাল থেকে রাস মেলার আয়োজন বন্ধ করে শুধুমাত্র রাস পুজা বা সনাতনীদের উৎসব পালনের সিদ্ধান্ত নেয় বনবভিাগ।

বনবিভাগ ও উদযাপন কমিটি সূত্রে জানা যায়, রাস উৎসবস্থল দুবলার চরে যাওয়ার জন্য সুন্দরবনরে অভ্যন্তরে পাঁচটি রুট নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া পূর্ণ্যাথীদের নিরাপত্তা, হরিণ শিকারি ও অনুপ্রবশেকারীদের প্রতিরোধে উদ্যোগ নেওয়া হরয়ছে। এজন্য বনরক্ষীদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে।

সূত্র জানায়, এক সময় রাসোৎসবকে কেন্দ্র করে সনাতন র্ধমাবলম্বীদের পাশাপাশি দেশিবিদেশি বিভিন্ন র্ধমের লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হতো সংরক্ষতি বনের দূর্গম এই দীপে।
রাসোৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি ও দুবলার ফিশারমেন গ্রুপের সভাপতি বীর মুিক্তযোদ্ধা মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ জানান, প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও সাগরতীর দুবলার চরের আলোরকোলের অস্থায়ী মন্দিরে রাধাকৃেষ্ণর প্রতিমা স্থাপন করা হবে। ১৪ নভেম্বর শুরু হবে পুজা র্আচনা।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগ বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করীম জানান, দুবলারচরের রাস উৎসবে সনাতন ধর্মের লোকজন ছাড়া অন্য কাউকে যাওয়ার অনুমতিপত্র (পাস) দেওয়া হবেনা। ১৪ অক্টোবর সকাল থেকে রাস উৎসবে যোগ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট স্টেশন অফিস থেকে পূর্ণ্যাথীদের অনুমতিপত্র দেওয়া হবে।