আজ সোনাহাট স্থলবন্দর পরিদর্শনে আসছেন ভুটানের রাজা
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় অবস্থিত সোনাহাট স্থলবন্দর পরিদর্শনে আসছেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক। আজ বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে তিনি সোনাহাট স্থলবন্দর পরিদর্শন করবেন।
বাণিজ্য সম্ভাবনা ও পারস্পরিক সম্পর্ক বাড়াতে বাংলাদেশ ও প্রতিবেশী ভুটানের সহযোগিতায় দেশের উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা কুড়িগ্রাম হতে যাচ্ছে ‘ভুটানিজ বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল’। অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য নির্ধারিত স্থান, যাতায়াত ব্যবস্থা, সোনাহাট স্থলবন্দর,দুই দেশের আন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সার্বিক দিক বিবেচনায় এই সফর বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে। আজ দুপুরে রাজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করবেন। পরিদর্শন শেষে ভুটানের রাজা সড়কপথে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে ভারত হয়ে ভুটানে প্রবেশ করবেন। সোনাহাট স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর এটিই হবে প্রথমবারের মতো কোনো বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানের সফর।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ভুটানের রাজার কুড়িগ্রাম সফর বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। তাঁর সফর এখানকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও বাণিজ্যিক বিকাশে মাইলফলক সৃষ্টি করবে। অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু হলে কুড়িগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জোন হিসেবে পরিচিতি পাবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটবে।
শিল্পায়ন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে আগামী এক দশকের মধ্যে কুড়িগ্রাম এই অঞ্চলের অন্যতম শীর্ষ জেলা হবে। সব মিলিয়ে অনন্য রোডম্যাপে উঠতে যাচ্ছে কুড়িগ্রাম। নদ-নদী ও চরাঞ্চল অধ্যুষিত এই জেলায় কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াকরণ কারখানাসহ শিল্পায়নের সুযোগ সৃষ্টি হবে। শুধু ভুটান ও বাংলাদেশ নয়, এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের কার্যক্রম চালু হলে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের পাশাপাশি ভারতের সেভেন সিস্টার্স খ্যাত অঞ্চলগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষর (বেজা) চেয়ারম্যান ইউসুফ হারুন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে। এরই মধ্যে ১৩৩.৯২ একর জমি বেজার কাছে হস্তান্তর করেছে জেলা প্রশাসন। আরো ৮৬ একর জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান। এখানে মোট ২১১ একর জমির প্রয়োজন হবে। তিনি বলেন, ‘আশা করি, এই অঞ্চল এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে ত্বরান্বিত করবে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সাইদুল আরিফ বলেন, ‘আরো ৮৬ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব আছে। ভুটানের অর্থনীতি যেহেতু কৃষিভিত্তিক, আশা করছি, এই অঞ্চলে কৃষিভিত্তিক কারখানা গড়ে তুলবে। সবুজ অর্থনীতিতে তারা বিনিয়োগ বাড়াবে।’
উল্লেখ্য, ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক গত ২৫ মার্চ চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় আসেন।বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। গত ২০২৩ সালের মে মাসে লন্ডনে ভুটানের রাজা ও রানির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সভায় কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রস্তাবিত ‘ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ স্থাপনে জেলা শহরের ধরলা সেতুর পূর্বে কুড়িগ্রাম-ভূরুঙ্গামারী সড়কের পূর্ব পাশে অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য জায়গা নির্ধারণ করে জেলা প্রশাসন ও বেজা।
এর আগে ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর ভুটানের সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। এতে পিটিএর আওতায় ভুটানের বাজারে বাংলাদেশের ১০০টি পণ্য শতভাগ শুল্ক মুক্তভাবে রপ্তানির সুযোগ পাওয়া যাবে। একইভাবে বাংলাদেশের বাজারে ভুটানের ৩৪টি পণ্য বিনা শুল্কে প্রবেশ করতে পারবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন