‘আপন জুয়েলার্স বন্ধ করলে সবার ব্যবসা বন্ধ করা উচিত’
আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ দাবি করেছেন, ‘আমি অবৈধভাবে ব্যবসা করি না। আমি বৈধভাবে ব্যবসা করছি।’
বুধবার শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরে দিলদার আহমেদসহ আপন জুয়েলার্সের অন্য দুই মালিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এমন দাবি করেন তিনি।
দিলদার আহমেদ বলেন, ‘আমি যেভাবে ব্যবসা করি সারা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা সেভাবে ব্যবসা করে। যদি আমার দোকান বন্ধ করা হয়, তাহলে সারা বাংলাদেশের ব্যবসা বন্ধ করা উচিত।’
সকাল পৌনে ১২টা থেকে বিকেল ৪টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মাঝে ৩০ মিনিট বিরতি দেওয়া হয়। মালিকদের মধ্যে ছিলেন দিলদারের অন্য দুই ভাই গোলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদ।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে যখন দিলদার বের হন, তখন সাংবাদিকরা তাঁর কাছে বিষয়গুলো নিয়ে জানতে চান। তখনই তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ, আমাকে ছেঁড়ে দেন।’ তবে পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
দিলদার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আইনকে শ্রদ্ধা করি। গোয়েন্দা বিভাগের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। আমরা উনাদের একটি দরখাস্ত দিয়েছি। তাঁরা আমাদের দরখাস্ত আমলে নিয়েছে। তাদের যা যা কাগজপত্র প্রয়োজন আমরা সেসব দেব।’
দিলদার আরো বলেন, ‘আমাদের ৪০ বছরের একটা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। একটা সাইন বোর্ড আছে এখানে। এটা একটা বৈধ ব্যবসা। শুল্ক বিভাগের একটা দায়িত্ব আছে আমাদের অবহিত করার জন্য।’ তিনি আরো বলেন, ‘তাঁরা আমাদের শোরুমগুলো সিলগালা করেছেন। তাঁরা আমাদের কাগজপত্রগুলো দেখবেন, যদি আমাদের কাগজপত্র সঠিক প্রমাণিত হয় তাহলে আমাদের শোরুমগুলো খুলে দিবেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে দিলদার বলেন, ‘আমাদের এখানে কোনো অবৈধ জিনিসপত্র নেই। সব বৈধ জিনিস।’ তিনি আরো বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে কেউ কখনো কাগজপত্র দেখাতে পারে? আমরা কাগজ দেখাব। আমাদের উকিল আছে। আমরা সব নোট করব। আমরা ভ্যাট দেই, ট্যাক্স দেই।
আপন জুয়েলার্সের মালিক বলেন, ‘পাঁচ বছর ধরে স্বর্ণের কোনো আমদানি নেই।’ দিলদার বলেন, ‘দেশে এখন রিসাইকেলিং করেই স্বর্ণের ব্যবসা চলছে। আমি যেভাবে ব্যবসা করি সারা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা সেভাবে ব্যবসা করে। যদি আমার দোকান বন্ধ করা হয় তাহলে সারা বাংলাদেশের ব্যবসা বন্ধ করা উচিত।’
স্বর্ণের উৎসের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে দিলদার বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। সে সময়ে অনেক নীতিমালা নিয়ে কথা হয়েছিল। কিন্তু সে নীতিমালা করতে পারিনি। একটা ব্যবসার নীতিমালা থাকা উচিত।’
দিলদার আরো বলেন, ‘আমি যদি অন্যায় করে থাকি আমাকে মাফ করবেন। আপনাদের মাধ্যমে আমি দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাই।’
‘বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি’
এদিকে জিজ্ঞাসাবাদ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান বলেন, ‘আমরা আপন জুয়েলার্সের বিভিন্ন শাখা থেকে সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণালঙ্কার ও ৪২৭ গ্রাম ডায়মন্ড জব্দ করেছি। এসব পণ্যের কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি ওই জুয়েলার্সের মালিকরা।’
মইনুল খান আরো বলেন, ‘ওই জুয়েলার্সের মালিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান কাগজবিহীন এসব স্বর্ণালঙ্কারের মধ্যে কিছু আছে গ্রাহকের। যার পরিমাণ সর্বোচ্চ ১০ কেজি হতে পারে। তাঁরা আজ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। তাঁরা সময় চেয়েছেন। আমরা আগামী ২৩ মে সকাল ১১টা পর্যন্ত সময় দিয়েছি। ওইদিন সশরীরে এসে কাগজপত্র নিয়ে হাজির হতে হবে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন