আবদুল হাই ইদ্রিছী এর কবিতা ‘হাসন রাজা’
হাসন রাজা
-আবদুল হাই ইদ্রিছী
বাংলাদেশে ফুটেছিলো মরমী এক ফুল,
দিনে রাতে যাচ্ছে খেয়ে কর্ম তাহার দুল।
সুনামগঞ্জের লক্ষণশ্রী জন্ম তাহার হয়,
কর্মে তিনি বীর বাহাদুর জীবন করেন জয়।
আটারোশ চৌয়ান্ন সাল ষোল ডিসেম্বর,
আলোকিত করে আসেন পিতা-মাতার ঘর।
সহজ সরল ভাষায় তিনি লিখে গেছেন গান,
আজো তাহা মরমিতে হয়ে আছে চান।
লিখে গেছেন গান কবিতা ভালোবাসা ভরে,
যায় বোঝা তা ‘হাসন উদাস’ গ্রন্থখানা পড়ে।
ধর্ম ও প্রেম মানবতা গান কবিতায় ভরা,
মানব প্রেমে বুকে ছিলো ভালোবাসা চড়া।
গান শুনে তাঁর হয়নি উতাল এমন কোন লোক,
দেখেনি তো এ সমাজে আমার দিব্য চোখ।
গানে তাহার জাদুমাখা প্রেম বিরহের সুর,
জীবনটাকে জানার আছে শিক্ষাতে ভরপুর।
একটা সময় ভোগবিলাসে দিয়েছিলেন ডুব,
বুঝতে পেরে হয়েছিলেন অনুতপ্ত খুব।
অপরাধের স্বীকৃতিটা রবের কাছে দেন,
সাম্য শান্তির পথটা তখন বাচাই করে নেন।
কৃতী এবং স্মৃতি আছে অসীম অফুরান,
কর্মে তাহার গুণের বাহার উঁচু রবে মান।
ধনে তাহার মন ভরেনি- মন ভরেনি পদে,
তাই তো তিনি সাঁতার কাটেন মানবতার নদে।
তাকে পেয়ে ধন্য সিলেট ধন্য আমার দেশ,
হবে কী আর কৃতীর কথা বলে কভু শেষ।
সুনামগঞ্জের সোনা তিনি বিশ্বব্যাপি দাম,
জমিদারি রেখেও যিনি ঝরান মাথার ঘাম।
পশু-পাখির তরে তাহার ছিলো ভালোবাসা,
ঘোড়া এবং ‘কুড়া’ পাখির প্রতি ছিলো খাশা।
‘জং বাহাদুর’ ‘চান্দমুশকি’ দুটি ঘোড়ার নাম,
আরো ছিলো অনেকগুলো ঘোড়া প্রেমের খাম।
ঘোড়া এবং কুড়া পাখির আকৃতিটা দেখে,
যান যে তিনি ‘সৌখিন বাহার’ গ্রন্থখানা লেখে।
আরো একটি গ্রন্থ আছে ‘হাসন বাহার’ নামে,
দীর্ঘ দিন এই গ্রন্থটি তাঁর আটকা ছিলো জ্যামে।
বিশ্বকবি তাহার কাছে তত্ত্ব খোঁজে পান,
রবি ঠাকুর তাকে নিয়ে তাই তো লিখে যান।
শিল্পকলায় চলায় বলায় ছিলো ছন্দ তাল,
কর্ম গুণে মর্ম তাহার থাকবে চিরকাল।
উনিশশত বাইশ সালের ডিসেম্বরের ছয়,
এই তারিখে রবের ডাকে মৃত্যু তাহার হয়।
নিজেই তিনি কবর তাহার প্রস্তুত করে যান,
এই কবরে শুয়ে আছেন নিয়ে সকল শান।
হাসন রাজা আজো তাজা তাহার গানের ঢেউ,
হৃদয় থেকে মুছেনিতো শিল্পকলার কেউ।
নামে রাজা ধনে রাজা রাজা তিনি কাজে,
হাসন রাজার দিলটা তাজা ছিলো প্রজার মাঝে।
হাসন ছিলেন হাসন আছেন থাকবে চিরদিন,
কর্মে তাহার গুনের বাহার নয় তো আলোহীন।
তাহার গানের সুধা পানে বাড়ছে সদা ঋণ
গান-কবিতায় বাজিবে তাঁর কৃতকর্মের বীণ।
আবদুল হাই ইদ্রিছী, লেখক সাংবাদিক ও কবি।
সম্পাদক: মাসিক শব্দচর।
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি: শব্দচর সাহিত্য ফোরাম (শসাফো), মৌলভীবাজার।
মোবা: ০১৭১৫৯৭৬১৩৪
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন