আবারও পেছালো স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ এর উৎক্ষেপণ

শেষ মুহূর্তে এসে আবারও আটকে গেল দেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ এর উৎক্ষেপণ। শুক্রবার দিবাগত রাতে একই সময়ে আবারও কৃত্রিম উপগ্রহটির উৎক্ষেপণের সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানানো হয় স্পেসএক্সের সরাসরি সম্প্রচারে।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টা ৪৭ মিনিট) ‘স্পেস এক্সে’র ফ্যালকন-৯ রকেটের মাধ্যমে ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাবেরাল উৎক্ষেপণ মঞ্চ থেকে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপিত হবার কথা থাকলেও শেষমেশ তা হয়নি। তবে স্পেসএক্স সূত্রে জানা গেছে, পরদিন বাংলাদেশ সময় শুক্রবার (১১ মে) একই সময়ে স্যাটেলাইটটির উৎক্ষেপণ করা হবে।

এর আগে গত ৪ মে উৎক্ষেপেণের কথা ছিল প্রায় ২ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ স্যাটেলাইটটি। কিন্তু, কারিগরি কারণে ৭ মে উৎক্ষেপেণের সিদ্ধান্ত হলেও পরে তা পিছিয়ে ১০ মে করা হয় এ মহাকাশ যাত্রার।

কিন্তু এদিনও নির্ধারিত সময়ে স্যাটেলাইটটির উৎক্ষেপণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হলেও উড়তে সক্ষম হয়নি এটি। শেষমেস পনের মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করে এর কারিগরি দিক খতিয়ে দেখা হয়। কারিগরি সমস্যার কারণে এটির উৎক্ষেপন সম্ভব হয়নি বলে জানানো হয়েছে প্রাথমিকভাবে।

এদিকে দেশের এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত সরাসরি দেখতে ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের কেপ ক্যানাভেরালে এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। সেখানে তার সাথে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি জুনাইদ আহমেদ পলক, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদসহ স্যাটেলাইট প্রকল্পটির শীর্ষ গবেষক ও কর্মকর্তাগণ।

শেষমুহূর্তে এসে উৎক্ষেপিত না হওয়া এবং দ্বিতীয়বারের মত উৎক্ষেপণের সময় পেছানো নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন, উৎক্ষেপণের বিষয়টি শেষ সময় পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে ছিলো। কিন্তু ৪২ সেকেন্ড আগে স্যাটেলাইটটির উৎক্ষেপণ থামিয়ে দেওয়া হয়। কোনো রকম ঝুঁকি না নিয়ে পুরো প্রক্রিয়াকে পুনরায় পরীক্ষা করে আগামীকাল একই সময়ে বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করা হবে।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের প্রজেক্ট নেয়া নেয় সরকার। বিটিআরসি ২০১৫ সালের নভেম্বরে দেশের প্রথম স্যাটেলাইট নির্মাণের জন্য ফ্রান্সের থালেস এলিনিয়া স্পেস ফ্যাসিলিটিস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে।

এছাড়া স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের জন্য বাংলাদেশ ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে রাশিয়ার স্যাটেলাইট প্রতিষ্ঠান ‘ইন্টার স্পুটনিক’র কাছ থেকে ২ কোটি ৮০ লাখ ডলারে ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমায় (স্লট) কক্ষপথ স্লট কেনে। একইসাথে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য স্পেস এক্স’র ফেলকন-৯ লঞ্চার ব্যবহার করতে যুক্তরাষ্ট্রের সাথেও চুক্তি করে বাংলাদেশ। এভাবেই নানা পথ পরিক্রমা শেষে স্যাটেলাইটটি এখন উৎক্ষেপণের অপেক্ষায় আছে।