আর যাই হোক টিন আর গম চুরি করব না : কনক চাঁপা
বিএনপির প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করতে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা সিরাজগঞ্জ-১ (কাজীপুর) আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন তিনি। দল থেকে টিকিট পেলে নির্বাচনে অংশ নিবেন জনপ্রিয় এই শিল্পী। হঠাৎ করেই কনক চাঁপার রাজনীতির মাঠে নামার কারণ জানার ইচ্ছে পোষণ করেছেন তারার ভক্তরা। শিল্পী হিসেবে লক্ষ লক্ষ মানুষের হৃদয়ে ঠাঁই পেয়েছেন যিনি, তার রাজনীতিতে সরব হওয়ার কারণ কী?
ফেসবুকে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়ে এ বিষয়ে বলেছেন কনক চাঁপা। তিনি বলেন,‘ছোট বেলা থেকেই আমি আমার মাকে সমাজ সেবায় নিয়োজিত থাকতে দেখেছি। তার মানবসেবা দেখে দেখে বড় হয়েছি। দুইমুঠ ভাত থেকেও যে আরেকজন কে সহায়তা করা যায় নিরবে তা দেখে বিস্মিত হয়েছি। মানুষের প্রতি ভালবাসা, পশুর প্রতি ভালবাসা, অসহায়ের পক্ষে কথা বলা এগুলো আমার মায়ের বাড়াবাড়ি রকমের অভ্যাস। তার আদর্শেই বড় হবো খুব স্বাভাবিক।’
কনক চাঁপা আরও বলেন, ‘বড় হয়ে যখন পেশাদার শিল্পী হয়ে রুটিরুজী শুরু করেছি তখন থেকেই আমি অসহায়ের পাশে আছি। সমাজের সব অসংগতির বিরুদ্ধে আমার কঠোর অবস্থান। একজন সফল শিল্পী হয়েও আমি কখনোই আমার বিত্তকে মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্তে পরিবর্তন করিনি। একথা আমার সাথে যারা চলাফেরা করেন তারা সবাই একবাক্যে বলবেন। আমার মানসিক শক্তি, শারীরিক শক্তি সবই বর্তমান। আমি একজন সাহসী মানুষ বটে। আর মানুষের পাশে বৃহৎ আকারে দাঁড়াতে বড় একটা প্ল্যাটফর্ম দরকার।’
নিজেকে সৎ ও নির্ভিক দাবি করে কনক চাঁপা বলেন, ‘আমার অর্থনৈতিক শক্তি দরকার কিন্তু সে অর্থ আমার জন্য না। দুইমুঠ ডালভাত খাওয়ার জন্য বাকী সারাজীবনের অর্থ কড়ি আমার আছে এবং আমাকে যারা অপছন্দ করে তারাও জানে কনকচাঁপা আর যাই হোক টিন আর গম চুরি করবেনা ইনশাআল্লাহ। আমি একজন সৎ মানুষ ও বটে। এ আমার অহংকার নয়। আমার সততা আমার গর্ব। আমার প্রিয় বাক্য ‘ভালবাসি প্রাণ ভালবাসি পৃথিবী’। একটা শুঁয়োপোকাকেও ভালবাসা দিতে আমার বিন্দুমাত্র দ্বিধা নেই। ভালবাসা দিয়েই আমি পথ সাজাবো ইনশাআল্লাহ।’
নিজের এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়াতেই তার নির্বাচনে অংশ গ্রহন করা। এমনটি জানিয়েই কনক চাঁপা বলেন, ‘আমি আমার গ্রাম কাজীপুর এর মানুষের পাশে গায়ে গা লাগিয়ে দাঁড়াতে চাই। তারা অনেক দিন ধরে নির্যাতিত একথা সবাই জানে। সেখানে আমার আরাম আয়েশের জীবন ছেড়ে গা ঝাড়া দিয়ে উঠে দাঁড়ানো ছাড়া আর কোনো পথ আমার ছিলো কি? আমি একজন পঞ্চাশের ঘরের মানুষ। এই বয়সেই গানের জগতের সব পুরস্কার সব ভালবাসা সব আশীর্বাদ পেয়েছি। আরামদায়ক এই তুলতুলে ফুলফুলে জীবন ছেড়ে যুদ্ধে নামলাম মানুষকে ভালবেসে। কারণ তাদের অপার ভালবাসার বিনিময়ে তাদের অনেক বেশী ভালবাসা উপহার দিতে চাই।’
নিজের নির্বাচনী এলাকার আশঙ্কার কথা জানিয়ে কনক চাঁপা বলেন, ‘আমার যে আসন তাতে যে যুদ্ধ হবে তাতে আমি অপঘাতে মরেও যেতে পারি সে আশংকা ও আমার আছে। থাকুক আমি সেসব পরোয়া করিনা। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করিনি সেই আফসোস থেকেই আমি দেশের জন্য আমার জীবন উৎসর্গ করতে চাই।
আমি যুদ্ধে নামলাম হারার জন্য নয়, কিন্তু হেরে গেলেও লজ্জিত হবো না কারণ আমি নিজের কাছে নিজে পরিষ্কার।’
উল্লেখ্য, কনক চাঁপার বাবার নাম আজিজুল হক মোর্শেদ। পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে তৃতীয় কনক চাঁপা। অসংখ্য জনপ্রিয় গান উপহার দিয়ে তিনি বাংলা গানের ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছেন। চলচ্চিত্র, আধুনিক গান, নজরুল সঙ্গীত, লোকগীতি সহ প্রায় সবধরনের গানে কনক চাঁপা সমান পারদর্শী। তিনি ৩২ বছর ধরে সংগীতাঙ্গনে কাজ করে যাচ্ছেন। এ পর্যন্ত চলচ্চিত্রের তিন হাজারেরও বেশি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কনক চাঁপা। প্রকাশিত হয়েছে ৩৫টি একক গানের অ্যালবাম।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন