আরপিও সংশোধন : সরকারের দিকে তাকিয়ে ইসি
গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) সংশোধনীর জন্য সরকারের দিকে তাকিয়ে রয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জাতীয় নির্বাচনের অন্যান্য প্রস্তুতি এগিয়ে নেওয়া হলেও আরপিও সংশোধন না হওয়ায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার সংক্রান্ত বিধিমালা চূড়ান্ত ও নির্বাচনি ম্যানুয়াল তৈরি করতে পারছে না সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। ফলে চূড়ান্ত প্রস্তুতিতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আরপিও সংশোধনের চিন্তা থেকে সরে এসে গত জুনের দিকে নির্বাচন কমিশন সংসদ নির্বাচনের সীমানা নির্ধারণ, ভোটার তালিকা হালনাগাদ, নির্বাচনি সামগ্রী ক্রয়সহ যাবতীয় কাজ গুছিয়ে এনেছিল। কিন্তু গত আগস্টে ইসির অবস্থানে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়। হঠাৎ করে ইসি সিদ্ধান্ত নেয় আরপিও সংশোধন করে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিধান যুক্ত করার। সে অনুযায়ী একজন কমিশনার আপত্তি জানালেও, গত ৩০ আগস্ট ইভিএম যুক্ত করে আরপিও এর সংশোধনী অনুমোদন করে ইসি। তা ভেটিংসহ আইনে পরিণত করতে আইন মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছে।
গত ৩ সেপ্টেম্বর আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পর মন্ত্রীসভার তিনটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও এখনও তা মন্ত্রীসভায় ওঠেনি। ফলে, সদ্য সমাপ্ত সংসদের ২২তম অধিবেশনে এটা উত্থাপন বা পাস করা সম্ভব হয়নি। জাতিসংঘ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের কারণে এ সপ্তাহে মন্ত্রীসভার বৈঠক হচ্ছে না, আগামী সপ্তাহেও সম্ভবনা কম। মন্ত্রীসভার অনুমোদনসহ আগামী মাসের তৃতীয় বা শেষ সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় দশম সংসদের শেষ অধিবেশনে এটি পাস হতে পারে। অবশ্য আগে-ভাগে সংশোধনীর প্রয়োজন হলে সংসদের জন্য অপেক্ষা না করে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে করারও সুযোগ রয়েছে। সেটা হলেও তা অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের আগে সম্ভব নয়।
এই আইন সংশোধন হলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সীমিত পরিসরে ইভিএম ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। এ বিষয়ে শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) এক অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘আইনি ভিত্তি পেলে এবং মেশিনগুলো ত্রুটিমুক্ত হলে আমরা সংসদ নির্বাচনে সীমিত আকারে ইভিএম ব্যবহার করবো।’
আরপিও সংশোধনীর বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘আরপিও সংশোধনীর খসড়া প্রণয়ন করে তা ভেটিংসহ আইনে রূপান্তর করার জন্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। এটা করার দায়িত্ব এখন সরকারের। তবে আমরা নিয়মিত সরকারের সংশ্লিষ্ট শাখার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’
আরপিও সংশোধন না হওয়ায় নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের কাজ এগিয়ে রাখছি। আরপিও’র সংশোধনী না এলে ইভিএম-এর বিধিমালা তৈরি ও ম্যানুয়াল ছাপানো যাচ্ছে না। তবে আমাদের প্রত্যাশিত সময়ের মধ্যে আরপিও সংশোধন হলে এগুলোর ক্ষেত্রে সমস্যা হবে না।’
কমিশন সূত্রে জানা যায়, আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে সংসদ নির্বাচনের তফসিল এবং ডিসেম্বরের শেষ দিকে ভোটগ্রহণের পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে ইসি। তফসিলের আগে কমিশন মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে মাঠের প্রকৃত চিত্র জানার চেষ্টা করবে এবং একই সঙ্গে নেবে প্রয়োজনীয় পরামর্শও।-সৌজন্যে : বাংলা ট্রিবিউন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন