আসামিদের শনাক্ত করলেন হিরো আলম, ডিবির প্রতি কৃতজ্ঞতা
হামলার ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামিদের শনাক্ত করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের বাইরে হামলার শিকার স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম।
উপ-নির্বাচনে হামলার ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) ডিবি কার্যালয়ে যান হিরো আলম। সেখান থেকে বেরিয়ে দ্রুত আসামিদের ধরায় সাংবাদিকদের সামনে ডিবির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
হিরো আলম বলেন, ‘আমি ডিবির প্রতি কৃতজ্ঞ। আমরা ভাবতেই পারিনি যে, আসামিদের এতো তাড়াতাড়ি ধরবে। আমি ভেবেছিলাম হামলাকারীরা ক্ষমতাসীন দলের লোক, তাদের হয়তো ধরবে না।’
ইতোমধ্যে ১৬ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদের শনাক্ত করেছেন বলে জানান হিরো আলম। বাকি চার পাঁচজনকে আজ রাতের মধ্যেই ধরা হবে বলে ডিবির পক্ষ থেকে তাকে আস্বস্ত করা হয়েছে।
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবেন না বলেও জানান হিরো আলম।
এদিকে নির্বাচনের দিন হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় মূলহোতা মানিক রাজিব ও আল আমিনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হক তাদের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
সকালে তাদের আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার উপ-পরিদর্শক নুরে উদ্দিন।
গত মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) আসামি ছানোয়ার কাজী (২৮) ও বিপ্লব হোসেনের (৩১) ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। একই সময় মামলার অপর পাঁচ আসামিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
অন্যদিকে তাদের আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন- মাহমুদুল হাসান, মুজাহিদ খান, আশিক সরকার, হৃদয় শেখ ও সোহেল মোল্লা।
এর আগে হামলার ঘটনায় রাজধানীর বনানী থানায় মামলা করেন হিরো আলমের ব্যক্তিগত সহকারি সুজন রহমান শুভ। মামলায় অজ্ঞাত আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হলে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল হোসেন আলম এবং তার ব্যক্তিগত সহকারি পরান সরকারসহ প্রতিনিধি রাজীব খন্দকার, মো. রনি, মো. আল-আমিনসহ অনেকে বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করতে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় হিরো আলমসহ প্রতিনিধিরা বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শনে যান। হিরো আলমসহ তারা পাঁচ-ছয়জন বনানী বিদ্যানিকেতন ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার সময় অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ২০ জন বেআইনিভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের গতিরোধ করে বিভিন্ন ধরনের গালিগালাজ করতে থাকে।
একপর্যায়ে আসামিরা হত্যার উদ্দেশে হিরো আলমকে আক্রমণ করে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মারতে থাকে। তাদের মধ্যে থেকে একজন হত্যার উদ্দেশ্যে দু’হাতে হিরো আলমের কলার চেপে ধরে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে এবং অন্য একজন তার তলপেটে লাথি মারলে হিরো আলম রাস্তায় পড়ে যান।
তখন অন্য আসামিরা হিরো আলমকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি ও লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম এবং টানাহেঁচড়া করে। ওই সময়ে বাদি এবং অপর ব্যক্তিগত সহকারি পরান সরকার মিলে হিরো আলমকে হামলাকারীদের হাত থেকে রক্ষার জন্য এগিয়ে গেলে তারা বাদিসহ পরান সরকার, রাজীব খন্দকার, রনি ও আল-আমিনকে মারধর করে। এরপর কেন্দ্রে ডিউটিরত পুলিশ এবং একতারা প্রতীকের সমর্থনকারীদের সহায়তায় হিরো আলমসহ তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন