ইবিতে খেলাকে কেন্দ্র করে মারামারি, আহত ১২

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিকেট ও ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুঃপক্ষের মাঝে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের প্রায় ১২ জন আহত হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বিকাল ৫ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল মাঠ, ডায়না চত্ত্বর ও মেডিকেলে দফায় দফায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল মাঠে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের জিয়ন সরকার ও কবিরুল ইসলাম, ল এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বীজন রায়সহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী মাঠের দক্ষিণ পাশে ফুটবল খেলছিলো। অপরদিকে মাঠের উত্তর পাশে মার্কেটিং বিভাগের তুর্য, আলী রিয়াজ ও হাফিজ, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের মাহমুদুল হাসান সাফিসহ বেশ কয়েকজন ক্রিকেট খেলছিলো। এসময় মাঠে উভয় পক্ষের দুইদিকে বল যাওয়া-আসাকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি হয়। এসময় ফুটবল খেলোয়াড় বীজন রায় ও জিয়ন ক্রিকেট খেলোয়াড়দের খেলতে বাধা দেয় এবং স্ট্যাম্প তুলে ফেলে দেয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং মারামারি বেঁধে যায়। এতে ক্রিকেট খেলোয়াড় তুর্য কপালে আঘাতপ্রাপ্ত হোন। এ ঘটনা শেষে ক্রিকেট খেলোয়াড়রা স্থান ত্যাগ করে। পরে হল থেকে বাংলা বিভাগের ধ্রুবসহ (১৯-২০) বেশ কয়েকজনকে নিয়ে তারা আবার লাঠিচোঠা নিয়ে মাঠে আসে। এবং ফুটবল খেলোয়াড়দের সাথে পুনরায় তারা দ্বিতীয় দফায় মারামারিতে জড়িত হয়। এক পর্যায়ে সেখানে মারামারি থেমে যায়। পরে উভয় পক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়না চত্ত্বরে গিয়ে তৃতীয় দফায় মারামারিতে লিপ্ত হয়।

এসময় ফুটবল পক্ষের আহত হোন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের জিয়ন সরকার (১৮-১৯) ও কবির (১৮-১৯), ল এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বীজন রায় (১৯-২০), আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মেজবাহ উল হক ও শাহিন পাশা (১৯-২০)। অপরদিকে ক্রিকেট দলের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের সিয়াম ও জ্যাকি ইসলাম (১৯-২০), মার্কেটিং বিভাগের তুর্য, আলী রিয়াজ ও হাফিজ (১৯-২০), ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের মাহমুদুল হাসান সাফি (২১-২২) ও অর্থনীতি বিভাগের সাদি (১৯-২০) আহত হোন। আহতদের মধ্যে তুর্যের অবস্থা গুরুতর হওয়ার তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। অন্যদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এদিকে মেডিকেলে গিয়ে চতুর্থ দফায় আবারও মারামারিতে জড়ান উভয়পক্ষ। এসময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা বীজন রায় পুনরায় মারধরের শিকার হোন। পরে সেখানে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন।

ক্রিকেট পক্ষের আহত শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান সাফি বলেন, ‘আমরা মাঠে সেখানে সাতআট জন ছিলাম। তারা মাঠের ওইপাশ থেকে বাশ নিয়ে এসে আমাদের উপর হামলা করে৷ উদ্দেশ্য মূলক ভাবেই তারা এই হামলা চালায় যে আমাদের নির্দিষ্ট এই কয়েকজনকে মারতে হবে। পরে আবার আমাদের বন্ধুরা আসলে তাদেরকেও তারা বাঁশ দিয়ে মারধর করে মাথা ফাটায়, আহত করে।’

চিকিৎসা কেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. খুরশিদা জাহান বলেন, আমরা আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, সে চোখে আঘাত পেয়েছে। বাকিরা দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠবে বলে আশাকরি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ বলেন, আমরা সংঘর্ষের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছি। বাইরের কারো ইন্ধন আছে কিনা খতিয়ে দেখে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।