ইভিএম প্রসঙ্গ : আগে নিজেরা চালানো শিখুন, পরে অন্যকে শেখান
বাংলাদেশে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সুস্পষ্ট ধারণা নেই বলে উল্লেখ করেছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। ইভিএম বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আগে নিজেরা চালানো শিখুন, পরে অন্যকে শেখান।’
বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর লেকশোর হোটেলে ‘ইভিএমকে না বলুন আপনার ভোট সুরক্ষিত করুন’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন কাদের সিদ্দিকী।
বঙ্গবীর বলেন, ‘ইভিএম যারা এনেছে তারাও এর ব্যবহার ঠিকমতো জানে না, যারা ভোট দেবে তারা কখনো ইভিএম দেখেইনি। একজন নাগরিকের ইচ্ছেমতো, পছন্দমতো ভোট দেয়ার অধিকার আছে কিন্তু যে যন্ত্র জনগণ কখনো দেখেনি সেটা স্পর্শ করলে যে ভোট হবে এটা তারা বিশ্বাস করতে পারে না।’
অনুষ্ঠানের সভাপতি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন (ইসি) বর্তমান সরকারের আজ্ঞাবাহ। জনগণের কাছে তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই। সব অপশক্তি অবলম্বন করে আবারও ক্ষমতায় আসতে চায় এ সরকার। আমরা ১০ বছর ধরে এ সরকার দ্বারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছি। আমাদের হাজার হাজার নেতা আজ কারাগারে। আমরা যখন নির্বাচনে যেতে চাচ্ছি তখনও আমাদের এসব নেতা কারাগারে আছেন। পদে পদে গ্রেফতার করা হচ্ছে। আগামী নির্বাচনে ভোট বিপ্লবের জন্য জনগণ প্রস্তুত রয়েছে।’
সেমিনারে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘দেশে গায়েবি মামলা, গ্রেফতার, নির্যাতন চলছেই। এসব কিছুর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলনের জন্য আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি। আমরা এমন নির্বাচন চাই, যে নির্বাচন প্রশ্নবৃদ্ধ হতে পারে না। আমাদের নির্বাচন কমিশনকে সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করতে হবে। আমরা নিরাপদ ভোট কেন্দ্র চাই।’
সেমিনারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘দেশের হাওয়া বদলে গেছে, সুতরাং যে যাই করুক না কেন জনগণকে ভোট কেন্দ্র পাহারা দিয়ে নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচন কমিশন বিবেকের কাছে দায়ী হবে, খোদার কাছে দায়ী হবে।’
সেমিনারে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘যে প্রতিষ্ঠান প্রশ্নবিদ্ধ তাদের ওপর আস্থা ও বিশ্বাসের সুযোগ নেই। নির্বাচন কমিশনের স্বচ্ছতার অভাব আছে। সংবিধানে সব নাগরিকের সমঅধিকারের কথা বলা আছে। কিন্তু কেউ ডান হাতে ভোট দেবে, কেউ বাম হাতে দেবে, কেউ আবার দুই হাতে ভোট দেবে এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। নির্বাচন কমিশনকে ইভিএমের ব্যবহার বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
সেমিনারে বক্তারা ইভিএম’র সময়ভিত্তিক কারচুপি, সংখ্যানির্ভর কারচুপি, ভোটের চূড়ান্ত ফলাফল নির্ভর কারচুপির বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। বক্তারা বলেন, বর্তমান পদ্ধতিতে ভোটারের আঙ্গুলের ছাপ না মিললে ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের সাহায্য নিয়ে ভোট প্রদান করা সম্ভব। ফলে একজনের ভোট আরেকজনের দেয়ার সুযোগ স্পষ্ট হয়। ইভিএম’এ কোনো পেপার টেন নেই ফলে ভোট পুনরায় গণনার সুযোগ নেই। সব ইভিএম মেশিন থেকে সংগৃহীত ভোটের চূড়ান্ত গণনা প্রক্রিয়াটি স্পষ্ট ও স্বচ্ছ নয়। প্রিসাইডিং অফিসারের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার সময় পোলিং এজেন্ট থাকছে না এবং পোলিং এজেন্টকে চূড়ান্ত ফলাফলের সার্টিফাইড কপি দেয়া হবে না। গোপনীয়ভাবে ওয়্যারলেস ডিভাইস সংযুক্ত করার মাধ্যমে ওয়্যারলেস প্রযুক্তি ব্যবহার করে দূরবর্তী অবস্থান থেকেই ভোটের ফল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন