রোহিঙ্গা ইস্যু: ‘এই মুহূর্তে বিশ্বে তার চেয়ে বড় তারকা আর দেখছি না’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইংরেজি দৈনিক খালিজ টাইমস-এ একটি দীর্ঘ নিবন্ধ লেখেন প্রখ্যাত সাংবাদিক, কলামিস্ট অ্যালান জ্যাকব। শনিবার প্রকাশিত ‘সহমর্মিতার মর্ম শেখ হাসিনা জানেন’ শিরোনামের ওই নিবন্ধে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে প্রাচ্যের নতুন তারকা হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
ওই নিবন্ধে জ্যাকব স্বীকার করেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তাণ্ডবে রাখাইন রাজ্য ছেড়ে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের নিয়ে লেখার আগেই শেখ হাসিনাকে খালিজ টাইমসের পাতায় স্থান দেয়া উচিত ছিল। কারণ, রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে শেখ হাসিনা যতোটা মানবিক আবেদন করেছেন, তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে রীতিমতো অভিভূত জ্যাকব।
জ্যাকবের ভাষায়, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা কয়েক লাখ রোহিঙ্গার জীবন বাঁচাতে সীমান্ত খুলে দিয়ে শেখ হাসিনা যে সহমর্মিতা ও সমানুভূতি দেখিয়েছেন, সে কারণে এই মুহূর্তে তার চেয়ে বড় কোনো তারকা আর দেখছি না।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, সবসময় আমি ঠিক করি, কোন বিষয় নিয়ে লিখবো, কাকে নিয়ে লিখবো; লেখার বিষয় নির্বাচনের আগেই এগুলো নিয়ে আমাকে ভাবতে হয়। অস্বীকার করার উপায় নেই যে, চলতি সপ্তাহে আমার লেখার বিষয় ছিল ভারতের দক্ষিণি চলচ্চিত্রের মানে তামিলের একজন অভিনেতা এবং রাজনৈতিক মাঠে তার আশাবাদী কর্মকাণ্ড।
তবে পরক্ষণেই আমার ভুল ভেঙেছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাচ্যের নতুন তারকা হতে যাচ্ছেন সেটা আমি বুঝে যাই। সে কারণে দক্ষিণের সিনেমার অভিনেতার কথা মাথা থেকে আপাতত ঝেড়ে ফেলে শেখ হাসিনাকে নিয়ে লেখার কথা ভাবি।
তিনি আরও লেখেন, হ্যাঁ, মিয়ানমারের একজন নোবেল জয়ীর চারিদিকে নিন্দার ঝড় উঠেছে; তাতে বেশিরভাগ আলোটা পড়েছে তার উপরেই। এর ফলে আমরা শেখ হাসিনার প্রতি সেভাবে আলো ফেলতে ব্যর্থ হয়েছি।
তবে গত সপ্তাহে তিনি যখন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেয়া ভাষণে মানবিক আবেদনটি করেন। সেটা আমার হৃদয় নাড়িয়ে দিয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ওই নিবন্ধেই জ্যাকব আরও লেখেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো নেতারা যখন হাল ধরেন; অভিবাসন সমস্যা নিয়ে হতাশায় নিমজ্জিত বিশ্বে তখন আশার আলো জ্বল জ্বল করে জ্বলতে থাকে।
তবে কিছু নেতিবাচক চিন্তাও এসেছিল জ্যাকবের মনে। ২৫ আগস্টের পর শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ড তার কাছে ক্ষুদ্র মনে হয়েছিল, তবে রাখাইন রাজ্য ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার ঢল এবং তাদের সমস্যা দেখার জন্য খালিজ টাইমস প্রতিনিধি পাঠানোর পর ভুল একেবারে ভেঙে যায়।
ক্ষুদ্র একটি দেশে পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে অবলীলায় আশ্রয় দেয়া এবং তাদের খাবার, কাপড়, অাশ্রয়সহ ওষুধপত্রের ব্যবস্থা করা দেখে অভিভূত না হয়ে পারেননি তিনি। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে নিজেদের খাবার রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ভাগ করে খেতে চেয়েছেন, সেটা তার হৃদয় একেবারে নাড়িয়ে দিয়ে গেছে।
রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবিলায় শেখ হাসিনার নেয়া পরিকল্পনাগুলোরও প্রশংসা করেন তিনি। একই সঙ্গে সু চি এবং হাসিনার তুলনাও করেন জ্যাকব; সেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাশাপাশি তার মেয়েকে অনেক উচ্চাসনে বসান তিনি।
সূত্র : খালিজ টাইমস
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন