এইচআইভি প্রতিরোধে মেয়েদের জন্য রিং আবিষ্কার
মরণব্যধি এইডস বা এইচআইভি ভাইরাস প্রতিরোধে নারীদের যনিতে ব্যবহার উপযোগী এক ধরণের রিং আবিষ্কার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, এইচআইভি সংক্রমণ প্রতিরোধের এক পরীক্ষায় তারা সফল হয়েছেন। আমেরিকায় অল্প বয়সী মেয়েদের মধ্যে এই পরীক্ষাটি চালানো হয়েছে। সারা বিশ্বে যতো নারী এই ভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত হয় তাদের পাঁচ ভাগের এক ভাগেরই বয়স ১৫ থেকে ২৪।
আফ্রিকায় সাহারা মরুভূমির আশেপাশের দেশগুলোতে প্রতিদিন এক হাজারের মতো নারী এতে আক্রান্ত হচ্ছেন। এই পরীক্ষায় মেয়েরা তাদের যোনিতে প্লাস্টিকের তৈরি নমনীয় একটি রিং ব্যবহার করেছে যা তাদেরকে এইচআইভি ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করেছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, রিংটির সাথে মেশানো থাকে এন্টি-রেট্রোভাইরাল ওষুধ এবং প্রত্যেক ছয় মাস পরে এটা বদলাতে হয়। এই রিংটি বসানো হয় সার্ভিক্সের ওপর। আকার নারীদের জন্মনিরোধক ডায়াফ্রামের সমান। এটা থেকে এক মাস সময় ধরে নিঃসৃত হয় ডেপিভিরাইন।
গবেষণায় দেখা গেছে রিংটি ব্যবহার করে এইচআইভির সংক্রমণ ৫৬ শতাংশ কমানো সম্ভব হয়েছে। বিজ্ঞানীরা এর সাফল্যের ব্যাপারে পরীক্ষা শুরুর আগে খুব একটা আশাবাদী ছিলেন না। কারণ অল্পবয়সী মেয়েরা সাধারণত যৌন সম্পর্কের সময় এ ধরনের ডিভাইস পরতে উৎসাহী হয় না।
কিন্তু যৌন সম্পর্কের ব্যাপারে অত্যন্ত সক্রিয় এরকম অল্পবয়সী নারীদের কাছে এই রিং সরবরাহ করা হয়েছিলো। তাদের বয়স ১৫ থেকে ১৭। তারা ছয় মাস ধরে এটি ব্যবহার করেছেন। তারা পছন্দও করেছেন।
তাদের ৯৫ ভাগ বলেছেন, রিংটি ব্যবহার করা খুব সহজ। এবং ৭৪ ভাগ বলছেন, এটি যে তারা পরে আছেন সেটি তারা তাদের দৈনন্দিন জীবনে বুঝতেও পারেন নি।পরীক্ষাটি চালানোর আগে আশঙ্কা করা হয়েছিলো যে পুরুষ যৌন-সঙ্গীরা হয়তো এটি পছন্দ নাও করতে পারেন। কিন্তু দেখা গেছে এটি তাদেরকে আরো বেশি আনন্দ দিয়েছে।
নারীরা যাতে এইচআইভির সংক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে তার জন্যে একটি ডিভাইস আবিষ্কারের লক্ষ্যে পরিচালিত এক উদ্যোগের অংশ হিসেবেই এই রিং ব্যবহার করা হচ্ছিলো।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর ফলে পুরুষ সঙ্গীরা কনডম ব্যবহার করছে কীনা এখন আর তার উপর নারীদেরকে নির্ভর করতে হবে না। যুক্তরাষ্ট্রে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ এলার্জি এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজের পরিচালক ড. অ্যান্থনি ফসি বলেছেন, নারীরা যদি নিজেরাই নিজেদের রক্ষা করতে পারে, এবং তাদেরকে সেই সুযোগ দেয়া হয়, যেটা কিনা খুবই গোপনীয় এবং নির্ভরযোগ্য, সেটা তাদেরকে সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে বড় ধরনের অগ্রগতি। সূত্র: বিবিসি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন