একেবারেই ভেঙে পড়েছেন নওয়াজ
আঘাতের পর আঘাতে ভেঙে পড়েছেন পাকিস্তানের ‘মিয়া সাহেব’ নওয়াজ শরিফ। প্রথমে দুর্নীতির অভিযোগে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারালেন, গেল দলীয় পদও। পরে জীবনসঙ্গী কুলসুমের ক্যান্সার। মেয়ে-জামাইসহ নিজের জেল।
সেই জেলের রায় মাথায় নিয়েই অসুস্থ পত্নীকে হাসপাতালে ফেলে পাকিস্তানে ফেরেন নওয়াজ। তারপর বিমানবন্দর থেকেই গ্রেফতার। এরপরই এলো নির্বাচন।
দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) ক্ষমতা হারাল। এতকিছুতেও মনোবল হারাননি নওয়াজ। দেশের তিন-তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর সেই রাশভারি ব্যক্তিত্ব নিয়েই গণমাধ্যমে এসেছেন বারবার।
কিন্তু মঙ্গলবারের সবচেয়ে বড় আঘাতটির পর একেবারেই ভেঙে পড়েছেন নওয়াজ। ক্যান্সারে আক্রান্ত তার তিন দশকের ছায়াসঙ্গী সহধর্মিণী কুলসুম নওয়াজ মারা যান। স্ত্রীর মৃত্যুর খবর শোনার পর নওয়াজ কী করেছিলেন, তা না জানা গেলেও বুধবার ১২ ঘণ্টার প্যারোলে মুক্তি পেয়ে তার বিমানবন্দরে আসার দৃশ্যটি দেখেছে গোটা পাকিস্তান।
‘জিও টিভি’তে প্রচারিত একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কড়া নিরাপত্তার ভেতর দিয়ে ইসলামাবাদের বিমানবন্দরে হেঁটে যাচ্ছেন এক অন্যমনস্ক নওয়াজ।
২০০৪ সালে বাবা মিয়া মোহাম্মদ শরিফের মৃত্যুর সময়ও জেদ্দায় নির্বাসনে ছিলেন নওয়াজ। সেসময় পাকিস্তানের ক্ষমতায় ছিলেন জেনারেল পারভেজ মোশাররফ। খবর ডনের।
বৃহস্পতিবার মৃত কুলসুমের প্রথম জানাজা লন্ডনে। এরপর তার দেহ বিমানে করে আনা হবে লাহোরে। সেখানে জাতি উমরায় তার লাশ দাফন করা হবে।
এ জন্য রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে বন্দি থাকা নওয়াজ শরিফ, মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ ও জামাই অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ সফদারকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার কুলসুম মারা যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই তাদের প্যারোলে মুক্তি দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, তারা ১২ ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্ত থাকবেন।
তবে ডন বলছে, এ প্যারোল শুক্রবার বিকালে জাতি উমরায় বেগম কুলসুমকে দাফন না করা পর্যন্ত বর্ধিত করা হতে পারে। তাদের প্যারোলে মুক্তি দেয়া হয় পাঞ্জাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে। এরপর মুক্ত নওয়াজদের সেই নূর খান বিমানঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখান থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল।
তাদের কমপক্ষে ৫ দিনের প্যারোলে মুক্তি দাবি করে আবেদন করেছিলেন নওয়াজ শরিফের ভাই ও পিএমএলএনের প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরিফ। কিন্তু প্যারোল অনুমোদন করা হয়েছে ১২ ঘণ্টার জন্য।
সরকারের একটি সূত্র বলেছেন, লাহোরে শরিফ পরিবারের আবাসিক এলাকা জাতি উমরায় বেগম কুলসুমের লাশ দাফন শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্যারোলের মেয়াদ বাড়াবে পাঞ্জাব সরকার।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন