এবার ভারতীয় সিলেবাস থেকে বাদ মোঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস!

মোদি জমানায় কী দেশের ইতিহাসটাই পালটে যাবে? ইতিহাসের পাঠ্যবই থেকে হারিয়ে যাবে মোঘলরা? ব্রাত্য হয়ে যাবেন আলাউদ্দিন খলজি, রাজিয়া সুলতানা, শেরশাহের মতো ঐতিহাসিক চরিত্ররা? এখন এমনই নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকের মনেই।

হলদিঘাট যুদ্ধের ইতিহাস পালটে ফেলেছে রাজস্থানের বসুন্ধরা রাজের সরকার। বিজেপিশাসিত এই রাজ্যে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হচ্ছে, হলদিঘাটে যুদ্ধে জয়ী হয়েছিলেন মহারাণা প্রতাপ। পরাজিত হয়েছিলেন মোঘল সম্রাট আকবর। আর এবার স্কুলের ইতিহাস বই থেকে মোঘল সাম্রাজ্য সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল মহারাষ্ট্র সরকার।

সম্প্রতি রাজ্যের অষ্টম ও নবম শ্রেণির ইতিহাস পাঠ্যবই সংশোধন করেছে মহারাষ্ট্র সরকার। সংশোধিত পাঠ্যবইয়ে মোঘল সাম্রাজ্য সম্পর্কে কার্যত কোনও তথ্যই নেই। বরাদ্দ কেবলমাত্র তিনটি লাইন। মোঘল সাম্রাজ্যের বদলের ইতিহাসের পাঠ্যবইয়ে ঢোকানো হয়েছে মারাঠা সাম্রাজ্যের ইতিহাস।

বস্তুত, চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই অষ্টম ও নবম শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়ানো হবে, সম্রাট আকবর নাকি ভারতবর্ষে একটি কেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থা চালু করার চেষ্টা করেছিলেন। অথচ আগে আকবরকে উদার ও সহনশীল শাসক বলেই উল্লেখ করা হত ইতিহাসের পাঠ্যবইয়ে। অন্যদিকে, ইতিহাসের পাতায় জনগণের রাজা থেকে আদর্শ শাসক হয়ে উঠেছেন ছত্রপতি শিবাজি। তবে শুধু মোঘলরাই নন, তারও আগে আলাউদ্দিন খলজি, রাজিয়া সুলতানা বা শেরশাহের মতো যেসব শাসকরা এদেশে রাজত্ব করেছিলেন, কোপ পড়েছে তাঁদের উপরও।

মহারাষ্ট্র সরকারের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন ইতিহাসবিদরা। ইতিহাসবিদ কিশোর দারাক বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই ইচ্ছাকৃতভাবে ইতিহাসকে বিকৃত করা চেষ্টা করছে মহারাষ্ট্র সরকার। অন্যদিকে মহারাষ্ট স্টেট ব্যুরো অফ টেক্সবুক প্রোডাকশন অ্যান্ড ক্যারিকুলাম রিসার্চের ইতিহাস বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান সদানন্দ মোরের সাফাই, মহারাষ্ট্রকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই স্কুলপাঠ্য ইতিহাস বই সংশোধন করা হয়েছে। দিল্লিতে সুলতানি শাসনের ইতিহাসই হোক কিংবা মোঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস, সবক্ষেত্রেই প্রধান্য পেয়েছে মহারাষ্ট্র।