এবার সোলারেই চলবে গাড়ি, তাও বাংলাদেশে
বিভিন্ন গবেষণা বলছে, ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের পেট্রল শেষ হয়ে যাবে। এ কারণে বিভিন্ন দেশ পেট্রলের বিকল্প জ্বালানি তৈরির চেষ্টা করছে। এতে বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকবে, এমনটি হতে পারে না।
সেই লক্ষ্যে ঠিক দুবছর আগে গবেষণা শুরু করেছিলেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) একদল গবেষক। মাত্র দুই বছরের প্রচেষ্টায় একইসঙ্গে তিনটি সুবিধা সম্পন্ন দেশের প্রথম হাইব্রিড ইলেকট্রিক ভেহিকল (ইভি) গাড়ি উদ্ভাবন করেছেন ওই গবেষক দলের সদস্যরা।
গবেষক দলের প্রধান ছিলেন রুয়েট যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক। তিনি জানান, উদ্ভাবিত গাড়ির সুবিধাগুলো হলো একইসঙ্গে ইলেক্ট্রিক্যাল, ইঞ্জিনসেবা, সোলার চার্জিং সিস্টেম রয়েছে। যে কারণে জ্বালানি শেষ হলেও চলবে গাড়ি।
তিনি বলেন, সোলার সিস্টেম থাকায় জ্যামে আটকে থাকলেও ব্যাটারি চার্জ হবে। তাই শক্তি বা জ্বালানির অপচয় হওয়ার সুযোগ নেই। আছে প্লাগ চার্জিং সিস্টেমও। যদি মন চায় বিদ্যুতের সাহায্য নিয়ে চার্জ দেয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের দিকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে একটি প্রকল্প পান রুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক। এরপর ২০১৭ সালের আগস্টে ৫ জন শিক্ষার্থী ও একজন শিক্ষক নিয়ে প্রকল্পটির কাজ শুরু করেন তিনি। তারা হলেন- অধ্যাপক ফজলুর রশীদ, যন্ত্রকৌশল বিভাগের ২০১৩-১৪ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহবুবুর রহমান, ওবায়দুল হাসান, তানভির রহমান, তরিকুল ইসলাম ও ২০১৪-১৫ বর্ষের শিক্ষার্থী ইসমাইল হক ফরিদ।
শিক্ষার্থীরা জানান, মূলত একটি পরিত্যক্ত গাড়ি ব্যবহার করে হাইব্রিড গাড়িটি তৈরি করা হয়েছে। রাজশাহীর একটি গ্যারেজ থেকে গাড়িটি সংগ্রহ করা হয়। পোর্টেবল ডিভাইসের মতো এই প্রযুক্তিটি এখন যেকোনো গাড়ির সঙ্গে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে।
গতির বিষয়ে তারা বলেন, ব্যাটারি ব্যবহার করেও ঘণ্টায় ৮০-১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতি পাওয়া সম্ভব হবে। তাছাড়া একবার চার্জ হলে জ্বালানি ব্যবহার ছাড়াও একটানা ২৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলা সম্ভব।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, একটি পরিত্যক্ত গাড়ি থেকে হাইব্রিড গাড়ি রূপান্তর করে ব্যবহার উপযোগী করতে খরচ পড়বে মাত্র ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা। গবেষকদের ব্যাটারি দিয়ে সহযোগিতা করেছে গ্যাস্টন নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন শিক্ষার্থীরা।
গবেষকদল প্রধান অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক বলেন, আগামী ১০-১৫ বছরের মধ্যে জাপানসহ ইউরোপীয় দেশে পেট্রল ও ডিজেল ইঞ্জিন তুলে দিয়ে ইলেকট্রিক ভেহিকল (ইভি) চলবে। এসব গাড়ির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো জ্বালানি কম খরচ হবে এবং পরিবেশ দূষণ হবে না। এজন্যই উন্নত দেশগুলো জ্বালানি ছাড়া এ গাড়ি চালানোর দিকে নজর দিচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশেও এটাকে গুরুত্ব দেয়া উচিত। এ গাড়িটিকে বাজারজাতে সরকার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন