ওরিয়েন্টেশনে অতিথির বক্তব্য চলাকালে মারামারি করল ইবির নবীন দু’গ্রুপ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কিউ এম মাহবুব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনের বক্তব্য চলাকালে সিটে বসা নিয়ে দু’গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (২৯ মে) দুপুর পৌনে দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের ইবরাহিম হোসেন রাজা ও সৈয়দ সাজিদ হোসেনসহ তাদের কয়েকজন বন্ধু ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম চলাকালে সিটে বসা ছিল। এরপর তারা রাজাকে রেখে প্রয়োজনীয় কাজে সিট ছেড়ে বাহিরে যায়। এসময় তাকে তারা সিট ধরতে রাখতে বলে। সে ফুলের স্টিক দিয়ে সিট ধরে রাখে। এসময় কমিউনিকেশন এন্ড জার্নালিজম বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের রাফি ও হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের শুভসহ তার বন্ধুরা সেখানে উপস্থিত হয়। তারা বসতে চাইলে রাজা তার বন্ধুদের সিট বলে দাবি করে। তবুও তারা রাজাদের সিটে বসে পড়ে। পরে দু,গ্রুপের মধ্যে দুইবার বাকবিতণ্ডা ও ধাক্কাধাক্কি হয়। মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়ররা বিষয়টি সমাধান করতে আসলে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের সাজ্জাদ সাকিবসহ সাদ্দাম হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের উপর হামলা করে। এতে মার্কেটিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের নাইমুল ইসলাম তুর্য ও একই বিভাগের ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের সৈয়দ সাজিদ হোসেন আহত হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে কর্তব্যরত কর্মকর্তা জানান, ‘ দুইজনকে মেডিকেলে আনা হয়। দুইজনই মুখে আঘাত পেয়েছে। একজনের নাকের পাশের চামড়া কেটে গিয়েছে। তবে হাড় ভাঙেনি। অন্যজন আঘাত পেয়েছে তবে কোনো ক্ষতের চিহ্ন নেই।’
ভুক্তভোগী ইবরাহিম হোসেন রাজা বলেন, আমি তাদের সিটে বিষয়ে বলার পরও তারা কথা শুনে নি। পরে আমার বন্ধুরা বাহির থেকে ফিরে আসলে রাফিসহ তার বন্ধুরা সিট থেকে উঠে যায়। তবে তারা বের হওয়ার সময় ইচ্চাকৃতভাবে আমার পায়ের পা লাগচ্ছিল। এতে আমি ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের একজনকে ল্যাং মারি। পরে তাদের একজন আমাকে গলাধাক্কা ও থাপ্পড় মারে।
আরেক ভুক্তভোগী সৈয়দ সাজিদ হোসেন বলেন, আমার বন্ধুকে থাপ্পড় মারার পর দু’গ্রুপের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। পরে আমরা বিভাগের সিনিয়র ভাইদের বিষয়টি অবগত করি। সিনিয়ররা এসে বিষয়টি সমাধান করে দেয়।
ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলাম তুর্য বলেন, আমাদের বিভাগের জুনিয়রদের সাথে অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের ঝামেলা হয়েছিল। এটা শুনে আমি সেখানে যাই। ঝামেলা যেন সংঘর্ষে রূপ না নেয় সেজন্য আমি তাদের বাহিরে নিয়ে আসতে চেষ্টা করি। এসময় ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের সাজ্জাদ সাকিবসহ তার বেশ কয়েকজন বন্ধু আমাদের উপর পেছন দিক থেকে হামলা চালায়।
অভিযুক্ত রাফি বলেন, সিটকে কেন্দ্র করে মূলত ঝামেলাটা হয়েছিল। আমরা উঠে যাচ্ছিলাম তখন মার্কেটিংয়ের ছেলেরা আমাদের পায়ে পাড়া দেয়। তখন সেখানে হাতাহাতি হয়। পরে অন্যরা এসে মারামারি, হট্টগোল শুরু করে। আমি সেভাবে সবাইকে চিনি না। এসময় আমি ৪-৫ জন বন্ধুকে নিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘বিষয়টা খুবই দুঃখজনক। এরকম প্রোগ্রামে এ ধরনের কিছু আশা করিনি। যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে তাদের এটা উচিত হয়নি। এর মাধ্যমে আমাদের নবীন শিক্ষার্থীরা আজকের প্রোগ্রাম থেকে একটা খারাপ অভিজ্ঞতা নিয়ে গেলো।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন