করোনায় ২৫ প্রশাসন কর্মকর্তার মৃত্যু, আক্রান্ত হাজারেরও বেশি

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত বিসিএসের প্রশাসন ক্যাডারের ২৫ জন কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে।

গত বছরের ৬ এপ্রিল প্রথম কোনো ক্যাডার হিসেবে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান ২২তম ব্যাচের কর্মকর্তা জালাল সাইফুর রহমান। যিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক ছিলেন।

এদিকে সর্বশেষ ২৫তম ক্যাডার হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) মারা গেলেন একই ব্যাচের কর্মকর্তা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল খায়ের মো. মারুফ হাসান।

জানা গেছে, করোনায় মারা যাওয়া এসব কর্মকর্তার মধ্যে ১৪ জন কর্মরত ছিলেন, বাকি তিনজন অবসরোত্তর (পিআরএল) ছুটিতে এবং আটজন ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন হাজারেরও বেশি কর্মকর্তা।

এমনকি গত ছয় দিনে মারা গেছেন তিন কর্মকর্তা যাদের মধ্যে একজন অতিরিক্ত সচিব, একজন যুগ্ম সচিব ও একজন উপসচিব ছিলেন।

গণমাধ্যমকে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (বাসা) দেয়া তথ্য থেকে এসব চিত্র উঠে এসেছে।

কর্মরত অবস্থায় যেসব কর্মকর্তা মারা যান

উপসচিব জালাল সাইফুর রহমান, আবুল খায়ের মো. মারুফ হাসান, প্রতিরক্ষা সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী, বগুড়ার পল্লী উন্নয়ন একাডেমির মহাপরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গৌতম আইচ সরকার, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) ফখরুল কবীর, পরিকল্পনা কমিশনের যুগ্ম প্রধান লুৎফর রহমান তরফদার, তথ্য কমিশনের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম খান, যুগ্ম সচিব খন্দকার অলিউর রহমান, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য নাসিরউদ্দিন আহমেদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব লিয়াকত আলী, সিনিয়র সহকারী সচিব এ কে এম মোয়াজ্জেম হোসেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ কে এম রফিক আহম্মদ ও যুগ্ম সচিব শামস ই আরা বিনতে হুদা।

অবসরোত্তর (পিআরএল) মারা যান যেসব কর্মকর্তা:

পিআরএল অবস্থায় মারা যান অতিরিক্ত সচিব তৌফিকুল আলম, অতিরিক্ত সচিব নূর হোসেন তালুকদার ও যুগ্ম সচিব খুরশীদ আলম।

অবসর থাকা অবস্থায় মারা যান যারা:

অবসর থাকা অবস্থায় মারা যান সাবেক সচিব বজলুল করিম চৌধুরী, সাবেক যুগ্ম সচিব সামছুল কিবরিয়া চৌধুরী, আ. রশিদ, মোহাম্মদ আলী (১৯৭০ ব্যাচ), ইসহাস ভূইয়া (১৯৭৩ ব্যাচ), সরওয়ারী আলম (১৯৭০ ব্যাচ), ওয়াজেদ আলী খান (৮১ ব্যাচ) ও তপন কুমার সরকার (৮৫ ব্যাচ)।

এ ছাড়া গত বছরের ২১ জুলাই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব নরেন দাস। আর গত আগস্টে মারা যান আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সাবেক সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শেখ ইউসুফ হারুন গণমাধ্যমকে জানান, এখন দেখা যাচ্ছে তরুণেরাও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন, মারা যাচ্ছেন। তাই কর্মকর্তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযথ সুরক্ষিত হয়ে সরকারি দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।