কর্মকর্তা-কর্মচারী জনগণকে হেনস্থা, সময় ক্ষেপন ঘুষ-দুর্নীতির সাথে জড়িত হলেই ব্যবস্থা- আসিফ মাহমুদ
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন- জনগণকে আপনাদের কাজের ক্ষেত্রে কোন প্রকার হেনস্থা কিংবা কালক্ষেপন, সময় ক্ষেপন, ঘুষ-দুর্নীতি এধরণের কোনো কিছুর সঙ্গে জড়িত হবেন না এবং তেঁতুলিয়া বাসীর কাছে আহবান থাকবে কোন সরকারি-বেসরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী এ ধরণের কোন আবদার করে, ঘুষ চাই কিংবা দুর্নীতির সাথে জড়িত আছে বলে আপনারা দেখেন তাহলে অবশ্যই সেটা আমাদেরকে জানাবেন আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিব।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অসহায় ও দুঃস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমরা জুলাই গণঅভ্যুর্থানের সময় এবং তার পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে আমাদের স্লোগানে আসতো টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া। এই স্লোগান দেওয়ার জন্য তেঁতুলিয়াকে সবাই চিনে। আজকে আসার সুযোগ হলো দেখার সুযোগ হলো তাই আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করে বিজয়ের মাসে মহান মুক্তিযোদ্ধের শহীদদেরকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।
জুলাই গণঅভ্যুর্থানে শহীদ এবং আহতরা তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখতে পাচ্ছি। আমরা দীর্ঘ ফ্যাসিবাদ সরকার থেকে মুক্তি পেয়েছি, তাদের শ্রদ্ধ্যাভরে স্মরণ করছি। আমি উত্তর বঙ্গে এসেছি উত্তর বঙ্গের প্রায় ১২টি জেলায় ২২টি উপজেলায় আমি পরিদর্শন করবো।
শুধু মাত্র একটি বিশেষ কারণে আপনারা জানেন বিগত সময়ে উন্নয়ন কর্যক্রমের ক্ষেত্রে উত্তর বঙ্গ অবহেলিত হয়েছে ও বঞ্জিত হয়ে আসছে। আমি নিজেই সরেজমিনে তাই পরিদর্শন করতে চেয়েছি, আপনাদের কথাগুলো শুনতে চেয়েছি এবং আপনাদের দাবিগুলো জানতে চেয়েছি। স্থানীয় অবকাঠামোগত উন্নয়নে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় উত্তরবঙ্গের প্রতিটি মন্ত্রণালয় এবং বৈষম্য হয়েছে সেটা নিয়ে সরেজমিনে কাজ করবে।
আপনাদের যে অবকাঠামো উন্নয়ন প্রয়োজন সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় কাজ করবে। এখানে তেঁতুলিয়া উপজেলা এবং পঞ্চগড় সদর উপজেলার কর্মকর্তাবৃন্দ আছেন আপনাদের প্রতি আহবান থাকবে নাগরিক সেবাকে অগ্রাধীকার দিয়ে আপনারা কাজ করবেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘তেঁতুলিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হচ্ছে স্থলবন্দর। আমরা যখন খোঁজ নিয়ে দেখি ওই স্থল বন্দরের ইজারা কর্মকর্তা-কর্মচারী সেগুলো সব খুলনা বিভাগ থেকে আসা।
স্থলবন্দর হওয়ার সময় যত লোকের এখানে কর্মসংস্থান হওয়ার কথা ছিল, সেটা না হয়ে কিছু মানুষ সিন্ডিকেট করে সকল মানুষকে জিম্মি করেছে। যেখানে আমরা অন্যায় দেখবো, সিন্ডিকেট দেখবো, চাঁদাবাজি দেখবো, ধীরে ধীরে আমরা সেগুলো উপড়ে ফেলবো। আমরা ঐক্যবদ্ধ যদি থাকি তাহলে স্থলবন্দর বলি, নিয়োগ বাণিজ্য বলি কোনটাই আমরা হতে দেবো না।’
উক্ত শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলীর সভাপতিত্বে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে রাব্বি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস.এম শফিকুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা ইকবাল হোসাইন, তিরনইহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসাইন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
জানা যায়, উপজেলার অসহায় দুঃস্থ দুই হাজার ৬ জন ব্যক্তিকে একটি করে কম্বল, শিক্ষার্থীদেরকে শিক্ষা উপকরণ সহ বাইসাইকেল বিতরণ করা হয়। এর আগে উপদেষ্টা সকালে হেলিকপ্টার যোগে আটোয়ারী উপজেলায় দুই হাজার ব্যক্তিকে কম্বল বিতরণ করেছেন।
তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুবুল হাসান এর সঞ্চালনায় ১৮ বর্ডার গার্ড বিজিবির সিও, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও উপকারভোগীরা উপস্থিত ছিলেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন