কলারোয়ায় প্রশ্নফাঁসে আটক ২১ জনকে দুই বছর করে কারাদণ্ড
প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক ২১ জনের দুই বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। শুক্রবার ভ্রাম্যমাণ আদালতে বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম তাদের সাজা দেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন-কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলার পরানখালী এলাকার মৃত. আহসান আলীর ছেলে আ. হালিম, সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার জাপাঘাট এলাকার আ. আজিজের ছেলে ব্যাংক কর্মকর্তা আফতাবুজ্জামান, একই এলাকার আব্দুল আলিমের ছেলে আমিরুল ইসলাম, আশাশুনি উপজেলার চেউটিয়া এলাকার আ. ওহাবের ছেলে কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ও দিদারুল ইসলাম, আশাশুনি কাকবাসিয়া এলাকার রইচউদ্দিনের ছেলে তরিকুল ইসলাম, কুন্দরীয়া এলাকার দুলাল ঘোষের ছেলে সুমেন্দ্র ঘোষ।
শ্যামনগর উপজেলার গোবিন্দ গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে হাফিজুর রহমান, একই এলাকার নুরুজ্জামানের ছেলে আব্দুল হালিম, আব্দুল হালিমের স্ত্রী সানজিদা বকুল, আব্দুল জলিল গাজির ছেলে হুমায়ুন কবির, আশাশুনির লাউতারা এলাকার পরিমল কৃষ্ণসরকারের ছেলে সন্নাসী কুমার সরকার, কাকবাসুয়া এলাকার মফিজ উদ্দিনের ছেলে রিয়াছদ আলী, আশাশুনির প্রতাপনগর এলাকার মৃত ফজলুল হকের ছেলে সাইফুল্লাহ, সদরের হাছিমপুর এলাকার গোপাল চন্দ্র ঘোষের ছেলে বিশ^জিৎ ঘোষ, আশাশুনির মহিষকুড় এলাকার গোলাম রব্বানীর স্ত্রী নাজমুন নাহার, কল্যাণপুর এলাকার মিন্টু গাজীর স্ত্রী রাবেয়া, চেউটিয়া গ্রামের আইয়ুব হোসেনের স্ত্রী সেলিনা খাতুন, তুয়ারডাঙ্গা এলাকার আসলাম হোসেনের স্ত্রী তানিয়া সুলতানা, সদরের রসূলপুর এলাকার সাইফুল ইসলামের স্ত্রী মুস্তারিয়া এবং আশাশুনি উপজেলার গোকুলনগর এলাকার সাইফুল ইসলামের স্ত্রী সুমাইয়া খাতুন। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে প্রশ্নফাঁস চক্রের সদস্য ছাড়াও বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী আছেন।
এর আগে সকালে কলারোয়া থানার পাশর্^বর্তী একটি ভবনে অভিযান চালিয়ে প্রশ্নফাঁস চক্রের সদস্যসহ ২৯ জনকে আটক করে র্যাব। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২১ জনকে দুই বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া দোষী প্রমাণ না হওয়ায় ছেড়ে দেয়া হয় আটজনকে।
দুপুর দুটায় র্যাব-৬ এর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে র্যাবের সিও লে. কর্নেল নুর উস সালেহিন জানান, প্রাথমিক স্কুলে শিক নিয়োগ পরীক্ষা সামনে রেখে কয়েকজন পরীক্ষার্থী বৃহস্পতিবার রাত থেকেই কলারোয়া উপজেলা সদরের সোনালী সুপারমার্কেট ভবনের কিডস কাব সেন্টারে জড়ো হন। চক্রের সদস্যরা রাতভর এবং সকালে মোবাইল ফোনে তাদের কাছে আসা প্রশ্নপত্র ও উত্তর ব্ল্যাকবোর্ডে লিখে দেয়। পরীার্থীরা তা শিখে নিতে থাকেন।
র্যাব সূত্র আরও বলেন, খবর পেয়ে র্যাব সদস্যরা ভবনটি ঘিরে ফেলেন। সেখান থেকে প্রথমে ২২ জন এবং পরে তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী আরও সাত জনসহ মোট ২৯ জনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে চক্রের মূল হোতা জনতা ব্যাংক সেনেরগাতী, সাতক্ষীরার শাখার ম্যানেজার কলারোয়ার আবতাবুজ্জামানও ছিলেন।
আবতাবুজ্জামান দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের চক্রের সঙ্গে জড়িত। অবৈধভাবে উপার্জন করা টাকা দিয়ে ঢাকায় ফাট, কলারোয়ায় কোটি টাকার বাড়িসহ কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াকালীন বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ওই সময় থেকেই তিনি এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন বলে জানা গেছে।
র্যাব জানিয়েছে, ঢাকায় একটি প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্র ১২ লাখ টাকার চুক্তিতে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাদের কাছে প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে র্যাব। এসব প্রশ্ন ও উত্তর ব্লাকবোর্ডে লিখে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া হয়। এজন্য সিন্ডিকেটের হাতে অগ্রিম পাঁচ লাখ টাকা দিতে হয়েছে। বাকি টাকা পরীক্ষা শেষে দেয়ার কথা ছিল।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন