কাঁদিয়ে চলেই গেলো কলারোয়ার সেই হাস্যোজ্জল নয়ন

কাঁদিয়ে চলেই গেলো কলারোয়ার সেই হাস্যোজ্জল নয়ন।
পরিচিত যারা জানতে পারলেন তাদের অনেকের চোখে পানি এসে গেলো অজান্তেই। রক্তের কোন আত্মীয় নয়, কিন্তু আত্মার বাঁধনের প্রিয় নয়নের মৃত্যুর খবর যেনো মুহূর্তেই মন মুষড়ে দিলো। রক্তের কারণেই অকালে নয়ন পাড়ি জমালো আসল ঠিকানায়। ব্লাড ক্যান্সারের কাছে হার মানতে বাধ্য হলো স্বল্পজীবনের হার না মানা সবার প্রিয়মুখ নয়ন।

রবিবার (১০ এপ্রিল) পবিত্র মাহে রমজানের ৮ম রোজার দিন সন্ধ্যার দিকে ইন্তেকাল করে সে (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।

ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত নয়ন গত কয়েক মাস রাজধানী ঢাকার ক্যান্সার হাসপাতাল ও সর্বশেষ ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন ছিলো। চিকিৎসকদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দিয়ে এদিন কলারোয়া আনার পথে তার মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু জানান, ‘নয়ন, আজ আর আমাদের মাঝে নেই। সদ্য হাস্যোজ্জ্বল একটি তরতাজা তরুণ মহান আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে পরপারে পাড়ি দিয়েছে। আল্লাহ তুমি নয়ন কে জান্নাতুল ফেরদৌসের বাসিন্দা করো।’

উল্লেখ্য, সর্বদা হাসিমুখের নয়ন হোসেন রাজু এসএসসি ২০১৬ সালের ব্যাচের ছাত্র। বয়স খুব জোর ২২ বছর। বাসা সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া পৌরসভাধীন মুরারীকাটি ৮নং ওয়ার্ডে। পিতার নাম রুহুল আমিন।
পরিবারের আর্থিক অবস্থা মারাত্মক খারাপ। স্বাভাবিকভাবেই কলারোয়া বাজারে একটি মোবাইলের দোকানে সেলস ম্যান হিসেবে কাজ করতো। সেখান থেকে পাওয়া সামান্য বেতন থেকেই চলতো সংসারের খরচ। পড়ালেখা ছিলো মূলত পরীক্ষার সময় পরীক্ষা দেয়ার মতোই। মাস চারেক আগে ব্লাড ক্যান্সারে ধরা পড়ে নয়নের। তখন ঠিকানা হয় হাসপাতালের বেড। আর ১০ এপ্রিল চলে গেলো স্থায়ী ঠিকানায়।

উদীয়মান ও প্রতিভাবান ওই যুবকটির জীবন প্রদীপ নিভে যাওয়ার আগে ব্যয়বহুল চিকিৎসা সামলাতে যে যার সাধ্য মতো নয়নের পাশে দাঁড়াতে শুরু করেছিলেন অনেকেই। তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, হয়তো পরকালে মহান আল্লাহ্ নয়নকে ভালো রাখবেন বলে।

নয়নের মৃত্যুর খবর পেয়ে তার পরিচিতরা মুষড়ে পড়েছেন। অজান্তেই চোখে পানি এসে গেছে অনেকের। সকলে তার জান্নাত কামনা করছে।

নয়ন যে দোকানে কাজ করতো তার পাশের ব্যবসায়ী ইমানুর রহমান জানান, ‘নয়ন ছিলো অনেক নম্রভদ্র ও নরম স্বভাবের একটি ছেলে। সবসময় মুখে হাসি লেগেই থাকতো। জানা মতে কারো সাথে কোনরকম ঝামেলাও হয়নি তার। অথচ ফুটফুটে অল্প বয়সী সেই ছেলেটি আজ ব্লাড ক্যান্সারে না ফেরার দেশে চলে গেলো।’