কারো ভোট বর্জনের আশঙ্কা দেখছেন না সিইসি
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের ভোট বর্জনের আশঙ্কা দেখছেন না প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। তিনি বলেছেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দলের নির্বাচন বয়কট করার আশঙ্কা নেই। আর যদি কেউ বয়কট করে, সেক্ষেত্রে সাংবিধানিক যে প্রক্রিয়া আছে সে অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের কাজ করতে হবে।’
বিবিসির প্রবাহের টিভি অনুষ্ঠানে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘সংবিধানের বাইরে তো কিছু করা যাবে না। তবে আমি শতভাগ আশাবাদী সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।
কাজী রকিবউদ্দিন আহমদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে দাবি করে ১০ম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট। পরে রকিবউদ্দিনের মেয়াদ শেষ হলে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হয় এ কে এম নুরুল হুদাকে। তার নেতৃত্বে বর্তমান নির্বাচন কমিশন গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি শপথ নেয়।
বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিএনপি অনেক সমালোচনা করে। কিন্তু দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই নির্বাচন কমিশন আস্থার সংকট থেকে বের হওয়ার কথা বলে আসছিল। নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ছয় শতাধিক ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, দুই সিটি করপোরেশন এবং দুটি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো নির্বাচন নিয়ে তেমন কোনো বিতর্ক উঠেনি। ২০১৪ সাল থেকে বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সহিংসতার যে চিত্র দেখা গেছে, সেটিও থেকেও দৃশ্যত মুক্তি মিলেছে।
গত বছরের ২১ ডিসেম্বর হয় রংপুর সিটি করপোরেশনের ভোট। আলোচিত এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি-দুই দলেরই পরাজয় হয় এবং বিপুল ভোটে জয় পায় জাতীয় পার্টি।
এছাড়া বর্তমান কমিশনের অধীনে যত ভোট হয়েছে, সেগুলোকে ঘিরে সহিংসতার তেমন ঘটনা ঘটেনি। তবে গত বছরের ৬ মার্চ ভোটের আগে ২৬ ফেব্রুয়ারি সিলেটের ওসমানীনগরে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষে প্রাণ হারান একজন। আর ২৩ মে নড়াইলের কালিয়ায় ভোটের দুই দিন পর দুই পক্ষের সংঘর্ষে দুই জনের প্রাণহানি ঘটে।
বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি মনে করে একটি নিরপেক্ষ সরকার না থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে বিএনপিকে আশ্বস্ত করার জন্য নির্বাচন কমিশন কী করতে পারে? এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, ‘আমি বলতে পারি নির্বাচন কমিশন যে পরিবেশ-পরিস্থিতি হোক না কেন, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন বদ্ধপরিকর। কোন ধরনের সরকার হবে এটা নির্বাচন কমিশন নির্ধারণ করতে পারে না।’
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সংলাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, সে সংলাপের উদ্দেশ্য ছিল সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান করা এবং সংলাপের মাধ্যমে সবগুলো রাজনৈতিক দল আশ্বস্ত হয়েছে। তারা সবাই বিশ্বাস করেছেন নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব।
জাতীয় নির্বাচনের আগে সেনাবাহিনী মোতায়েন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিতর্ক হয়। সাক্ষাৎকারে বিষয়টি সম্পর্কে জানাতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েন একটি বাস্তবতা।
নুরুল হুদা বলেন, ‘আগের নির্বাচনগুলোতে সেনা মোতায়েন হয়েছে। সুতরাং এবারের নির্বাচনগুলোতে যে সেনা মোতায়েন হবে না সেটা বলা যাবে না। আমরা তো সেনা মোতায়েনের বিপক্ষে কিছু দেখি না।’
বর্তমান কমিশনের অধীনে ৬০০’র বেশি স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়েছে এবং সেগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি হয়নি বলে দাবি করেন নুরুল হুদা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন