কালিগঞ্জে পলিথিন ও প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে বনজীবিদের দক্ষতা উন্নয়ন কর্মশালা

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে পলিথিন ও প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে বনজীবিদের দক্ষতা উন্নয়ন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে কালিগঞ্জ উপজেলা অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে “প্লাস্টিক ও পলিথিন দূষণ বন্ধ করি, সুন্দরবন রক্ষা করি” এ স্লোগানে বনজীবি নারী-পুরুষ সদস্যদের নিয়ে এ দক্ষতা উন্নয়ন কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।

সুন্দরবনের দূষণ এবং এর পরিণতি সম্পর্কে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার জনগনকে সচেতন করার করার লক্ষ্য উন্নয়ন সংস্থা জার্মান কো-অপারেশন, রুপান্তর এবং হেলভেটাস এর আয়োজনে কর্মশালাটি বাস্তবায়িত হয়।

রুপান্তরের সুন্দরবন প্রকল্পের জেলা সমন্বয়কারী মো: গোলাম কিবরিয়া সঞ্চালনায় কর্মশালাটির শুরুতে উপস্থিত বনজীবিরা পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার বাস্তবতা তুলে ধরেন। দীর্ঘক্ষণ বনের মধ্যে অবস্থান করায় বিভিন্ন ধরনের খাবার ও পানির জন্য অনটাইম প্লাস্টিকের ব্যবহার করেন তারা। ব্যবহার শেষে এসব প্লাস্টিকের মোড়ক এবং খালি বোতল ফেলে দেয় বনে। সঞ্চালক গোলাম কিবরিয়া বলেন সুন্দরবনের ৫৪ টি নদিতে প্রতিদিন প্রায় ৫০ টন পলিথিন ও প্লাস্টিক জমা হয়ে পরিবেশের ভারসাম্য হারাচ্ছে। পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্য নদী, খাল ও জলাশয়ে নিক্ষেপের ফলে এ সমস্ত বর্জ্য আশ্রয় নিচ্ছে সুন্দরবনের কোলে। মাইক্রো প্লাস্টিক কনা চরম দূষণ বাড়াচ্ছে মাটি ও পানির, নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বনের গাছপালা, বন্যপ্রাণী ও জলজ প্রাণীর উপর। যার ফলে উৎপাদনশীলতা কমে যাচ্ছে সুন্দরবনের। ফল সরুপ সুন্দরবন সংলগ্ন লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়ছে এবং দুর্যোগকালীন সময়ে ঝুকি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কর্মশালাটিতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালিগঞ্জ সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো: আফজাল হোসেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কালিগঞ্জ উপজেলা শাখার সদস্য সচিব মারুফ হাসান, সাংবাদিক শাহাদাৎ হোসেন, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ। কর্মশালাটির প্রশিক্ষক খালিদ লামী পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধে – ব্যবহার হ্রাস, পুন:ব্যবহার ও পুন:প্রক্রিয়াজাত করে ব্যবহার করার কৌশল অবলম্বন করতে বলেন। তিনি বলেন পরিবেশবাদী সংস্থার তথ্যমতে প্রতিবছর সুন্দরবনের প্রায় দেড় লাখ হেক্টর বনভূমি, দূষণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের নদী থেকে সংগ্রহ করা ২৫ প্রজাতির মাছ ও দুই প্রজাতির চিংড়িতে মাইক্রোপ্লাস্টিক মিলেছে। মাছের মাংসে সর্বনিম্ন ৫ দশমিক ৩৭ থেকে সর্বোচ্চ ৫৪ দশমিক ৩০ মাইক্রোপ্লাস্টিক টুকরো পাওয়া গেছে। তাই বাংলাদেশের সুন্দরবন (ম্যানগ্রোভ বন) ও সংলগ্ন অঞ্চল সমূহের দূষণ কমানো বাস্তুসংস্থান উন্নয়নে সকলকে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার আহবান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানটিতে অংশ নেওয়া বনজীবিরা পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যবহার হ্রাস করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে সকলকে সুন্দরবন ও জীব বৈচিত্র এবং জনসাস্থ্য রক্ষায় পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যবহার হ্রাসের আহবান জানান।