কালীগঞ্জে চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্রী সাহারা হত্যা মামলার তদন্তে সিআইডি
কালীগঞ্জের বহুল আলোচিত চাঞ্চল্যকর তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী সাহারা খাতুন হত্যা মামলার তদন্তে সিআইডি সাতক্ষীরা জেলার অপরাধ তদন্ত বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী দাউদ হোসেন এবং উপ-পরিদর্শক এনামুল হকের নেতৃত্বে একটি দল সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার তারালী ইউনিয়নের বাতুয়া ডাঙ্গা গ্রামে।
বুধবার ২ ফেব্রুয়ারি বেলা সাড়ে ১০ টা হতে দিনভর মামলার তদন্তকাজ সম্পন্ন করেন। তদন্তের সময় তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন, মামলার বাদী স্কুলছাত্রী সাহারার পিতা জাহিদ হাসান, মাতা খাদিজা বেগম ও দাদি আনোয়ারা বেগম সহ গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার বিশদ জানার চেষ্টা করেন।
তবে তদন্তের বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দাউদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, যেহেতু মামলাটি সবেমাত্র হাতে পেয়েছি স্পর্শ কাতর এ মামলাটি তদন্ত করে মূল ঘাতকদের সনাক্ত করতে সময়ের প্রয়োজন।
তবে তদন্ত করে প্রকৃত সত্য উদঘাটন শেষে মূল আসামিদের গ্রেপ্তার পূর্বক আদালতে অভিযোগ পত্র জমা দেওয়া হবে। আমাদের কাজ করতে দিন এবং কাজের সাহায্যের আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গতঃ কালীগঞ্জ উপজেলার বাথুয়া ডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল খালেক এর পুত্র জাহিদ হাসানের শিশু কন্যা সাহারা খাতুন ডাংগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর তৃতীয় শ্রেণীতে অধ্যায়নরত ছিল করোনাকালীন স্কুল বন্ধ থাকায় গত ২০২১ সালের ১৪ এপ্রিল অর্থাৎ পহেলা রমজান এর দিন সকাল থেকে একই গ্রামের শফিকুল ইসলাম ওরফে শফিকের কন্যা জান্নাতুল(৯) এবং মিজানুর রহমানের পুত্র সিয়াম মিলে বাড়ির পাশে একটি তেঁতুল গাছ তলায় খেলা করছিল।
ঐদিন দুপুর ১ টার সময় তেঁতুল গাছ তলায় একটি ঘরের হতে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় সাহারার মৃতদেহ মেঝেতে দেখা যায়। খবর পেয়ে তার মা খাদিজা খাতুন আনোয়ারা খাতুন সাপে কাটা সন্দেহে দ্রুত উদ্ধার করে ইঞ্জিনভ্যান যোগে কালিগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরবর্তীতে হাসপাতালে বাবা জাহিদ এবং দাদা খালেক উপস্থিত হয় খবর পেয়ে থানার উপ পরিদর্শক ওয়াহিদুর রহমান লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
উক্ত ঘটনায় ওইদিনই কালিগঞ্জ থানা পুলিশ বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে মামলা নাম্বার-১৮।
পরবর্তীতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার ডাক্তার আসাদুজ্জামান মেডিকেল অফিসার শিহাব উদ্দিন এবং ডাক্তার নাসির উদ্দিন সমন্বয় গঠিত বোর্ডের ময়নাতদন্তে শ্বাসরোধ করে হত্যার প্রতিবেদন আসে উক্ত প্রতিবেদনে প্রেক্ষিতে গত ২২/১০/ ২০২১ তারিখে কন্যা হত্যার বিচার চেয়ে বাবা জাহিদ হাসান বাদী হয়ে ৯ জনকে আসামী করে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে মামলা নাম্বার-২৫ উক্ত মামলায় মামলার ১ নাম্বার আসামী পাথরডাঙ্গা গ্রামের মৃত পিয়ার আলীর পুত্র শফিকুল ইসলাম ওরফে সফিককে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মোরশেদ আলী মামলার অন্য আসামিরা এছাক গাজীর পুত্র মিজানুর রহমান(৪০), মৃত জিয়াদ আলী গাজীর পুত্র একাধিক চুরি ছিনতাই চাঁদাবাজি মামলার আসামি নেতা ফারুক(৪৫), তার ভাই রফিকুল ইসলাম রফিক (৩৬), জেহের শাহিনুর গাজী (৫৫), শফিকুলের স্ত্রী জয়নাব পারভীন মিজানুরের স্ত্রী কেয়া পারভীন এবং পিয়ার আলীর স্ত্রী রাশিদা বেগম ও রফিকুলের স্ত্রী নুরুন্নাহার সহ অজ্ঞাত আরও পাঁচ ছয় জনের নামে মামলা হয়।
উক্ত মামলায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের সখ্যতা তৈরি করে গ্রেফতার না করায় বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাটি বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক সিআইডিতে ন্যস্ত হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন