‘কালোটাকায় শেয়ারবাজার শক্তিশালী’

জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার বিকেলে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার উপস্থাপনের সময় অর্থমন্ত্রী শেয়ারবাজার নিয়ে বলেছেন, কালোটাকায় শেয়ারবাজার শক্তিশালী হওয়ায় পুঁজিবাজারে অর্থের প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০৩ জুন) জাতীয় সংসদে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। প্রস্তাবিত বাজেটের মূল প্রতিপাদ্য ‘জীবন ও জীবিকার প্রাধান্য, আগামীর বাংলাদেশ’।

অর্থমন্ত্রী বলেন, পুঁজিবাজারকে গতিশীল করার লক্ষ্যে এক বছর লক-ইনসহ কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের আওতায় ফেব্রুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত ৩১১ জন করদাতা পুঁজিবাজারে অর্থ বিনিয়োগপূর্বক ৪৩ কোটি ৫৪ লাখ ৫২ হাজার ৯৮ টাকা আয়কর পরিশোধ করেছেন। যার ফলে দেশের পুঁজিবাজারে অর্থের প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পুঁজিবাজার শক্তিশালী হয়েছে।

আ হ ম মুস্তফা কামাল আরও বলেন, করোনা মহামারি পরিস্থিতি বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সাময়িকভাবে হলেও যে স্থবিরতা সৃষ্টি করেছে, তা দারিদ্র্য দূরীকরণে আমাদের চলমান অগ্রগতিকে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করেছে। তবে রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানার শ্রমিকদের বেতন প্রদান, সিএমএসএমই খাতসহ অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবাখাতে সুদ ভর্তুকিসহ স্বল্পসুদে চলতি মূলধনের যোগান, অতি দরিদ্র মানুষের মধ্যে নগদ অর্থ বিতরণ, বিনামূল্যে ও স্বল্পমূল্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি ও গৃহহীন মানুষের জন্য গৃহনির্মাণ কার্যক্রমের পরিধি সম্প্রসারণ এবং বিশেষায়িত ব্যাংক ও পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে কর্মসৃজন কার্যক্রমসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে দূরদর্শী ও সময়োচিত প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, তা শ্রমজীবী মানুষের চাকরি টিকিয়ে রাখতে ও অসহায় দরিদ্র মানুষকে ক্ষুধা হতে সুরক্ষা দিয়েছে।

এ সময় আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন- সরকার দেশের সব নাগরিককে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন প্রদান নিশ্চিত করবে। এর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডোজ ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য যত টাকাই লাগুক না কেন, সরকার তা প্রদান করবে। সে লক্ষ্যে এ বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, করোনা থেকে জনজীবনের সুরক্ষার জন্য সম্প্রসারিত ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় ন্যাশনাল ডেপলয়মেন্ট অ্যান্ড ভ্যাকসিন প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ কোভিশিল্ড কেনা হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি থেকে দেশের জনসংখ্যার শতকরা ২০ শতাংশ, তথা ৩ কোটি ৪০ লাখ মানুষের জন্য ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। এর মধ্যে তার মধ্যে এক লাখ ৬ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন এরই মধ্যে পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক থেকে করোনা ভ্যাকসিন কেনার জন্য ৫০ কোটি মার্কিন ডলার ও লজিস্টিক সাপোর্টের জন্য ১ কোটি ৪৮ লাখ মার্কিন ডলার ব্যবহৃত হচ্ছে। ভ্যাকসিন কেনার জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে ৯৪ কোটি মার্কিন ডলার পাওয়ার লক্ষ্যে ঋণচুক্তি চূড়ান্ত পর্যায় রয়েছে। পাশাপাশি ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক এবং এআইআইবি থেকে ভ্যাকসিন কেনার জন্য সহায়তা পাওয়া যেতে পারে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, মোট ৮০ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষ্যে ভাগ ভাগ করে পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগণকে এবং প্রতিমাসে ২৫ লাখ করে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। ইপিআই ও সিডিসি’র সমন্বয়ে এ ভ্যাকসিন দেওয়ার কার্যক্রম মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।