কিশোরীদের নগ্ন করে পূজাকে হেনস্তা বলল ভারতের মানবাধিকার কমিশন

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে মন্দিরে কিশোরীদের রেখে দেবী সাজিয়ে পূজা করার প্রথা হেনস্তা ও দাসত্ব বলে মন্তব্য করেছে ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

স্থানীয় সময় সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মানবাধিকার কমিশন এই মন্তব্য করে।

ভারতে তিন দশক আগে কিছু নারীকে মন্দিরে দেবদাসী হিসেবে রাখা হতো। তাঁদের সারা জীবন মন্দিরেই কাটাতে হতো। বিয়ে করা নিষিদ্ধ ছিল তাঁদের। ১৯৮৮ সালে আইন করে প্রথাটি বাতিল করা হয়। তবে আইনে নিষিদ্ধ হওয়ার পর ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু রাজ্যের অনেক স্থানে দেবদাসী প্রথার মতো কিছু আচার চালু রয়েছে।

ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দাবি, কিছু অঞ্চলের রীতি অনুযায়ী, কিশোরীদের কনের মতো করে সাজানো হয়। তারপর তাদের পোশাক খুলে নগ্ন করা হয়। এর মাধ্যমে কিশোরীদের ধর্মের নামে সারা জীবনভর পতিতাবৃত্তির মধ্যে প্রবেশ করানো হয়।

এক বিবৃতিতে মানবাধিকার কমিশন জানায়, ওই কিশোরীদের পরিবারের সঙ্গে বসবাস ও শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হয়। তাদের মন্দিরে থাকতে বাধ্য করা হয়। সেখানে তাদের মানুষের সম্পত্তি হিসেবে ধরা হয় এবং যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়।

মানবাধিকার কমিশন জানায়, মন্দিরে উৎসর্গ করা ওই কিশোরীদের বিয়ে করা নিষিদ্ধ। মন্দিরে নেচে অর্থ উপার্জন করে তারা। অনেক সময় তাদের বক্ষ উন্মুক্ত করে শুধু অলংকার পরিয়ে রাখা হয়। অনেককে দিয়ে মদের পাত্র বহন করানোও হয়।

তামিলনাড়ুর বিভিন্ন অঞ্চলে ১৫ দিন ধরে চলা ওই উৎসব শেষ হয়েছে গত মঙ্গলবার। সেখানে সাত কিশোরীকে মন্দিরে পূজার জন্য রেখে দেওয়া হয়। তবে ওই কিশোরীরা হয়রানির শিকার হয়নি বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার।

এ বিষয়ে তামিলনাড়ুর মাদুরাই জেলার প্রশাসনিক প্রধান কে বীর রাঘভ রায় বলেন, ‘আমাদের শিশু অধিকার রক্ষাকারী ওই মন্দিরগুলো পরিদর্শন করেছেন। এই প্রথাগুলো ২০০ বছর ধরে পালিত হচ্ছে। কিন্তু কোথাও হয়রানির খবর পাওয়া যায়নি। আমরা ওই কিশোরীদের শরীর চাদর দিয়ে ঢেকে রাখতে বলেছি।’