কুড়িগ্রামে চাঁদা না পেয়ে মামলার বাদীকে পেটালেন যুবদল নেতা

প্রবাসীর বাড়ি ভাংচুর করে জমি দখল করার অভিযোগে ২০২৩ সালে কুড়িগ্রামের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন প্রবাসীর স্ত্রী আকলিমা বেগম। সে মামলায় দুইজনের নাম উল্লেখ থাকলেও পরবর্তীতে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করে আরো তিনজনের নাম উল্লেখ করেন।

এতে কুড়িগ্রাম জেলা যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতা ও আসামি কাইয়ুম ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২২ জুন বাদীর ভাই কামাল হোসেনকে মারধর করে। রক্তাক্ত জখম অবস্থায় তিনি এখন কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, বাড়ি ঘর ভাঙচুর করে প্রবাসী হযরত আলীর জমি দখল করে আসামি আবুল মাষ্টার ও আলহাজ্ব মনছুর আলী। এমন অভিযোগে ২০২৩ সালে কুড়িগ্রাম আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন প্রবাসী হযরত আলীর স্থী আকলিমা বেগম। মামলার তদন্ত পায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

তদন্তে ওই ঘটনায় আরও ৩জন আসামির নাম যুক্ত করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নতুন ৩ আসামির মধ্যে কাইয়ুম আলী। কাইয়ুম কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন হুমকি প্রদান ও টাকার দাবি করে আসছিলেন বাদী আকলিমা ও তার বড় ভাই কামাল হোসেনের কাছে। চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি দেওয়ায় গত ২২ জুন সন্ধ্যায় হরিকেশ বিএম কলেজের সামনে কুড়িগ্রাম জেলা যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক আসামি কাইয়ুম বাদীর ভাই কামাল হোসেনকে আক্রমণ করে।

কামাল হোসেন বলেন, কয়েকদিন ধরে আসামি কাইয়ুম আমাকে ও আমার বোনকে বিভিন্নভাবে হুমকি করে আসছিল। সে আমাদের নিরাপত্তা দেবে এই মর্মে আমাদের কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। তবে আমরা তাকে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানাই।

এরপরও তিনি বিভিন্নভাবে আমার কাছে টাকা দাবি করে। সর্বশেষ ২২শে জুন আমাকে কয়েকবার ফোন দিয়েছিল টাকার জন্য। তবে আমি বারবার বলছি এ বিষয়ে আমি কোন টাকা দিতে পারবো না। সন্ধ্যার পর আমাকে বিএম কলেজের পাশে একা পেয়ে কাইয়ুম অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করেন এবং মারধর করতে থাকেন।

এক পর্যায়ে সে আমার কপালে ঘুসি মারেন, তার হাতে থাকা আংটির আঘাতে আমি গুরুতর আহত অবস্থায় এখন কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছি। ‘

আকলিমা বেগম বলেন,’ আসামি পক্ষ কাইয়ুম অনেক শক্তিশালী, বিএনপির নেতা। তাদের ভয়ে আমরা সবসময় ভীত থাকি। তারা সবসময় আমাদের হুমকি দেয়, রাতে বাড়িতে ঠিল ছোঁড়ে। আমরা বাড়ি থেকে বের হতে পারি না।’

অভিযুক্ত কাইয়ুম আলী বলেন, ‘আমি চাঁদাবাজির সাথে জড়িত নই। কামাল হোসেনের সাথে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি হয়েছিল। আমি বিএনপির করি, তবে বিএনপির কোন প্রভাব খাটাইনি। ‘

এ ব্যাপারে কথা হলে কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাজ্ব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ বলেন, ‘দেশনায়ক তারেক রহমানের কড়া নির্দেশনা রযেছে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী এবং দলের ভাবমূর্তি নষ্টকারী বিএনপির যে কেউ হোক না কেন তাকে আইনের হাতে তুলে দেয়া। এছাড়া আমরা অভিযোগ পেলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। কোন সন্ত্রাসী- দুষ্ট লোকের স্থান বিএনপিতে হবে না’।

পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘ জমিজমার বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন আছে। আমরা ফৌজদারি অপরাধের বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি। মামলায় নাম আসার কারণে মারপিট করে থাকলে আমার তার বিরুদ্ধে কোর্টে কড়া প্রতিবেদন দিব।’