কুড়িগ্রামে মেয়েকে উত্ত্যক্ত করায় তুলে এনে হাত পা বেঁধে যুবককে নির্যাতন করে পুলিশে সোপর্দ
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে এক যুবককে তুলে এনে হাত পা বেঁধে বেদম পিটিয়েছে স্থানীয় লোকজন। পরে ওই যুবক অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পুলিশে দিয়েছে তারা। ঘটনাটি ঘটেছে ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের দেওয়ানের খামার গ্রামে।
যুবককে অমানবিক নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, এক যুবককে হাত পা বেঁধে নির্যাতন করছে কিছু লোকজন।
পিটিয়ে লাঠি (গাছের ডাল) ভেঙ্গে যাওয়ার দৃশ্যও দেখা গেছে ভিডিওতে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর ইউনিয়নের দেওয়ানের খামার গ্রামের বৈদ্যতিক মিস্ত্রী নুরু মিয়ার ছেলে মোখলেছুর রহমান শান্ত (২০) প্রায় সময় একই গ্রামের ৯ম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে স্কুলে যাওয়া আসার সময় প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসতো। ওই স্কুল ছাত্রী তার প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করে তার বাবা মাকে জানায়। এ বিষয়ে ইতিপুর্বে গ্রাম্য বিচার হলেও ওই ছাত্রীকে দেখামাত্র তার বুকে ট্যাটো আমি দেওয়ানা লেখা দেখাতো এবং বিভিন্ন অঙ্গীভঙ্গী করতো।
গত ৪ জুন ওই স্কুল ছাত্রী তার বান্ধবীসহ প্রাইভেট পড়ে ভুরুঙ্গামারী সরকারী কলেজ মোড় সংলগ্ন মজনু মিয়ার বাড়ীর সামনে আসা মাত্র ওই যুবক শান্ত তার প্রেমের প্রস্তাবে রাজি হওয়ার জন্য পথরোধ করে দাড়ায়। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় জাপটে ধরলে ওই স্কুলছাত্রীর চিৎকার শুনে বাড়ির মালিক মজনু পিয়ন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌছে দেয়। পরের দিন ৫ জুন আবারও ওই ছাত্রীকে আটক করে জাপটে ধরার সময় মেয়েটি আর্তচিৎকার করলে এলাকার লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে তাকে আটক করে। পরে ছেলেটির হাত পিঠ মোড়া দিয়ে শক্ত রশি দিয়ে বেঁধে বেদম প্রহার করে স্থানীয়রা। এতে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থানায় সোপর্দ করে। সোমবার রাতে ওই স্কুল ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে থানায় একটি এজাহার দায়ের করে। পরে পুলিশ অভিযুক্ত যুবককে আটক দেখায়।
ভুক্তভোগী ওই মেয়ের বাবা মনসুর আলী বলেন, আমরা তো ওই ছেলেকে মারপিট করিনি। সে অপরাধ করেছে স্থানীয় লোকজন তাকে মারপিট করেছে। আমাদেন কি করার বলেন।
তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত ওই যুবকের বাবা নুরু মিয়া বলেন, আমার ছেলে ওই মেয়েকে প্রেমের প্রস্থাব দিয়েছে এটা সত্যি কথা। এনিয়ে একবার বিচার সালিশও হয়েছে। আমার ছেলে ওই মেয়েকে প্রেমের প্রস্থাব দিয়েছে এ কারণে গতকাল দুইটা মোটরসাইকেল এসে আমার ছেলেকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হাত পা বেঁধে বেদম মারপিট করেছে মেয়ে পক্ষের লোকজন। পরে ছেলে আমার অসুস্থ হলে তারা হাসপাতালে ভর্তি করায়। একজন অপরাধ করলে কি নিজের হাতে আইন তুলিয়ে নেয়া যাবে বলেন। সে যদি অন্যায় করে থাকে তার বিচার আইন করতো। কেন তারা নিজের হাতে আইন তুলে নিলো। আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে তারা বেদম মারছে। আমি এর বিচার চেয়ে তাদের নামে থানায় মামলা করেছি।
ভুরুঙ্গামারী থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, আটককৃত যুবকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় ওই যুবকের বাবাও তার ছেলেকে মারপিটের অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন