কুমিল্লার মুরাদনগরে বড়ই চাষে স্বাবলম্বী প্রবাস ফেরত ইউনুস
জীবিকার তাগিদে ১৪ বছর প্রবাসে থেকে কঠোর পরিশ্রম করেও ভাগ্য বদলাতে পারেনি, অবশেষে দেশে ফিরে বরই চাষ করে ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে সক্ষম হয়েছে ইউনুস ভূঁইয়া। ইউনুস কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার কাজিয়াতল গ্রামের মোসলেম ভূঁয়ার ছেলে।
বাণিজ্যিকভাবে বরই চাষ শুরু করে বেশ সফলতা পেয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা ইউনুস ভূঁইয়া। বর্তমানে তিনি ৬০ বিঘা জমিতে এ বল সুন্দরী কুল নামের বরই চাষ করে অর্থনৈতিক ভাবে বেশ লাভবান হয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল জায়গা জুড়ে লাগানো গাছগুলোতে ফলে ভরপুর হয়ে উঠেছে। এক একটি গাছ ৪ থেকে ৫ হাত লম্বা। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় দুলছে লাল সোনালি রঙের বরই গাছ গুলো। শীতের মিষ্টি রোদ পড়ে রঙিন বরই গুলো চকচক করছে। ফলের ভারে নুয়ে পড়েছে অনেক গাছের ডাল। বরই উপরের অংশে হালকা সিঁদুর রং রয়েছে। ফলটি আকারে বড়, দেখতে ঠিক আপেলের মতো। খেতেও খুব সুস্বাদু। বাজারে এ বরইয়ের চাহিদা ও দাম অনেক ভালো। ফলে চাষের সকল খরচ বাদ দিয়ে বেশ লাভবান কৃষি উদ্যোক্তা ইউনুস ভূইয়া। বরই চাষ করে ইতিমধ্যে তিনি এলাকায় চমক সৃষ্টি করেছেন। দূর দূরান্ত থেকে অনেক বেকার লোকজন এসে দেখছেন এবং এ বিষয়ে নানা পরামর্শ তার কাছ থেকে নিচ্ছেন।
মো. ইউনুস ভূঁইয়া জানান, জীবিকার তাগীদে দীর্ঘ ১৪ বছর তিনি সৌদি আরবে ছিলেন। সেখানে কৃষি খামারের তত্ত্বাবধান করেছেন। কয়েক বছর আগে দেশে আসেন। নিজের এবং অন্যের জমি লিজ নিয়ে ৬৬ বিঘা জমিতে মাছের খামার করেন। এলাকাটা উঁচু হওয়ায় পানি কমে যায়। তেমন লাভও পাচ্ছিলেন না। পরে স্থানীয় কৃষি অফিসের সাথে কথা বলে বরই চাষ শুরু করেন। চারা আনলেন নাটোর থেকে। আট মাসে বরই ফল আসা শুরু করে। ২০২১ সালে অল্প কয়েকদিনে তিনি কয়েক লক্ষাধিক টাকার বরই বিক্রি করেছেন। চলতি বছর আরো বেশি ফল পেয়েছেন।
তিনি জানান, জমি পত্তনসহ তার প্রায় ৫০ লাখ টাকার মতো পূঁজি লেগেছে। আশা করছেন চলতি বছর তার পূঁজি উঠে আসবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মাইন উদ্দিন আহমেদ বলেন, ইউনুস ভূঁইয়াকে শুরু থেকে উপজেলা কৃষি অফিস হতে আমরা বিভিন্ন পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি। জৈব সার ব্যবহার করে যেন ফল ও সবজি উৎপাদন করতে পারে সেজন্য তাকে কেঁচো কম্পোস্ট প্রদর্শনী দিয়েছি।
তিনি আরো জানান, কৃষি অফিসের উদ্যোগে মুরাদনগর উপজেলায় ১০০ কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি করি। এর অন্যতম সেরা উদ্যোক্তা ইউনুস ভূঁইয়া। শুধু এ উপজেলায় নয় পুরো কুমিল্লার মধ্যে তার বরই বাগান সবচেয়ে বড়। ৬০ বিঘা জমিতে চারো পাশে ক্যানেল তৈরি করে এ ফল বাগানটি গড়ে তুলেছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন