কুমিল্লার মুরাদনগরে স্কুল ভবন ঝুঁকিপূর্ণ, গাছতলায় পাঠদান
ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বিদ্যালয়ের ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয় ২০১৩ সালে। গত ৯ বছর ধরে ভাড়া করা ঘরে পাঠদান করা হচ্ছিল। কিন্তু গত দুই মাস ধরে সেই পরিত্যক্ত ভবনের সামনের গাছতলায় চলছে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান। এতে শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
এই চিত্র দেখা গেছে, কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার বাবুটি পাড়া ইউনিয়নের রামপুর দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। বিদ্যালয়টি ১৯৪০ সালে স্থাপন করা হয়। ওই সময় টিনের চালা দিয়ে কোনো রকমে পাঠদান করা হতো। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে একটি একতলা ভবন করা হয়। এরপর গত ৫০ বছরেও এ বিদ্যালয়ে অন্য কোনো ভবন বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। ২০১০ সালে একটি ভবন বরাদ্দ হলেও মাঠ ভরাটের অভাবে কাজ করা সম্ভব হয়নি। পুরনো একমাত্র ভবনটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ২০১৩ সালে এ ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এর পর পাশের চন্দন ডাক্তার ও হিন্দু বাড়িতে পাঠদান করা হয়। ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ের ভরাট করা মাঠের গাছতলায় চলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। পুরনো এ ভবনের ভাঙা দরজা-জানালায় উঁকি দিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি শ্রেণি কক্ষই ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ে রড বেরিয়ে গেছে। কক্ষর দেয়াল ও পিলারগুলোতে ফাটল দেখা দিয়েছে।
২০১৩ সালে এ বিদ্যালয়ে ৪২৩ জন শিক্ষার্থী ছিল। ভবন না থাকায় লেখাপড়া করতে কষ্ট হওয়ায় শিক্ষার্থীরা আশপাশের অন্য বিদ্যালয়ে চলে গেছে। অনেকে লেখাপড়া থেকে ঝরে পড়েছে। বর্তমানে এ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮০।
বিদ্যালয়ের অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দ্রুত একটি ভবন বরাদ্দ দেওয়ার জন্য সরকারের নিকট দাবি করেছে।বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুমিত্রা পাল দৈনিক আমাদের সময়কে বলেন, বিদ্যালয় ভবন, আসবাবপত্রের অভাব থাকলেও প্রতিবছর শিক্ষার্থী শতভাগ পাস করছে। এর মধ্যে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে ৩ জন করে ৬ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এর মধ্যে দুজন বৃত্তি পেয়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখে। পুরনো একমাত্র ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণার ৯ বছর অতিবাহিত হলেও নতুন ভবন নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বর্তমানে বিদ্যালয় মাঠের গাছতলায় চলছে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান।
মুরাদনগর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফওজিয়া আক্তার বলেন, আমরা মা সমাবেশ আর অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। ভবন পেতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরে চাহিদা পাঠানো হয়েছে।
মুরাদনগর উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবির বলেন, এ বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণ করতে বরাদ্দ পাওয়ার জন্য একাধিকবার চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আশাবাদী শিগগির বরাদ্দ পাওয়া যাবে।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন ভূঞা জনী বলেন, এ বিদ্যালয়ে একটি ভবন অতি জরুরি হয়ে পড়ছে। মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে দ্রুত ভবন বরাদ্দ আনার চেষ্টা করছি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন