তেল আছে, তেল নেই!
কুমিল্লায় সয়াবিন তেল নিয়ে তেলেসমাতি কাণ্ড!
কুমিল্লায় সয়াবিন তেলের বাজারে হঠাৎ করেই যেন তেলেসমাতি কাণ্ড শুরু হয়েছে। কেউ বলছে বাজারে তেল নেই, আবার কেউ বলছে তেল সংকটের বিষয়টি সম্পূর্ণ গুজব।
একদিকে তেলের দাম বাড়তে পারে এবং তেলের সংকট দেখা দিতে পারে এমন খবরে পরবর্তীতে বাড়তি দামে বিক্রি করার লক্ষ্যে ব্যবসায়ী ও আড়ৎদাররা তেল মজুদ করে রেখেছেন বলে অভিযোগ করছেন ক্রেতারা।
অন্যদিকে সাধারণ মানুষ চাহিদার তুলনায় বেশি তেল কিনছেন বলে বিক্রেতাদের অভিযোগ।
জেলার বিভিন্ন বাজারে বুধবার সকালে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৭০ টাকায় বিক্রি হলেও সন্ধ্যায় তা গিয়ে ঠেকে ২০০ টাকার ঘরে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টক পর্যন্তও তেলের দাম ২০০ টাকার ঘরেই ওঠা-নামা করতে দেখা গেছে।
অনেক দোকানি বলছেন তাদের কাছে পর্যাপ্ত তেল রয়েছে, আবার অনেকেই বলছেন, তাদের কাছে তেল নেই।
বুধবার ও বৃহস্পতিবার বিভিন্ন সময়ে কুমিল্লা নগরীর রাজগঞ্জ, চকবাজার, রাণীর বাজার, বাদশা মিয়াবাজার ও টমছম ব্রিজ বাজার ঘুরে ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
কুমিল্লা টমছম ব্রিজ এলাকার মুদি ব্যবসায়ী সজীব আহম্মেদ বলেন- গত দুই-তিনদিন ধরেই সয়াবিন তেলের সংকট রয়েছে। আমরা খুচরা ব্যবসায়ী। ডিলার ও আড়ৎদাররা আমাদেরকে তেল দিচ্ছেন না। আমার কাছে এখন এক ও দুই লিটারের কয়েকটি বোতল আছে। পাঁচ লিটারের কোনো বোতল নেই। অনেক ব্যবসায়ীকেই আজ বাড়তি দামে তেল বিক্রি করতে দেখেছি। আমি ১৭০ টাকা দরেই তেল বিক্রি করছি। তবে, অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ সয়াবিন তেল বেশি বিক্রি হয়েছে।
নগরীর রাজগঞ্জ এলাকার মুদি ব্যবসায়ী মো. সেলিম জাহাঙ্গীর বলেন- আমার কাছে খোলা কিংবা বোতলজাত কোন তেল নেই। গত দুইদিন ধরে কেউ তেল সাপ্লাই দিচ্ছেনা। রাশিয়া ও ইউক্রেনের অস্থিতিশীল অবস্থার কারণেই দেশে তেলের বাজারে সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে তেলের দাম। খোলা সয়াবিন তেলও লিটার প্রতি ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম আরও বাড়তে পারে।
নগরীর রাজগঞ্জ বাজারের মুদি দোকানি শাহজাহান হোসেন বলেন, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা দরে। গত সপ্তাহে ছিলো প্রতি লিটার ১৬০ টাকা। সপ্তাহ ব্যবধানে লিটার প্রতি ২০ টাকা বেড়েছে।
টমছম ব্রিজ বাজারে নিতপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে আস এনজিও কর্মী সাইদুল ইসলাম বলেন- ‘গত সপ্তাহে তেল কিনেছি ১৬০ টাকা লিটার, আজ সেই একই তেল ২০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। করোনার কারণে ৩ বছর ধরে বেতন বাড়ছেনা। মানুষ কীভাবে বেঁচে থাকবে? জিনিসপত্রের দাম মনে হয় ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাড়ছে।’
তীর সয়াবিন তেল কোম্পানির কুমিল্লা জেলার ডিলার রাজিব সাহা জানান, তেল পর্যাপ্ত আছে। অনেকে গুজব ছড়িয়ে ফায়দা লুটার চেষ্ঠা করছে।
এদিকে দাম বৃদ্ধির কথা স্বীকার করলেও কুমিল্লার বাজারে তেলের সংকট রয়েছে এমনটি মানতে রাজি নয় রাজগঞ্জ বাজার দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজগর। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটা দোকানে কম-বেশি তেল আছে। যারা বলে তেল নেই, তারা গুজব ছড়িয়ে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।’
একই সুর ভোক্তা অধিদপ্তরের। জেলা ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘নগরীর বাজারগুলোতে তেল নেই বিষয়টি পুরোপুরি গুজব। প্রত্যেকটা গুদামে আমরা মনিটরিং করেছি। পর্যাপ্ত তেল মজুত আছে। তবে তেলের বাজারে দামের অস্থিরতা রয়েছে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন