কুড়িগ্রামে কেটে ফেলা মুড়ি ধানের গোছা থেকে পুনরায় ধান উৎপাদনে উচ্ছ্বাসিত কৃষক
কুড়িগ্রাম জেলায় কৃষি বিভাগের পরামর্শে দুই শতাধিক কৃষক ৭৫ একর জমিতে ফেলে রাখা ধানের রেটুন বা মুড়ির গোছা থেকে নতুন করে আবার ধান পেয়ে উচ্ছ¡সিত। আগামীতে এ পদ্ধতিতে ধান পেতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে জেলার কৃষক।
বোরো ধান কাটার পর পর জমিতে ফেলে রাখা কাটা মুড়ির গোছা পরিচর্চা করে পূণরায় ধান পেয়ে খুশি কুড়িগ্রামের কৃষক। পরীক্ষামূলকভাবে এই মুড়ি বা নাড়া থেকে বিঘায় প্রায় ৬ মন ধান পেয়েছে কৃষক। স্বল্প খরচে ফেলে রাখা মাঠে শুধু ধান নয়, খড় পেয়ে গবাদি পশুর খাদ্য মেটাতে পারবে তারা। গোটা বোরো ধান কেটে ফেলার পর প্রায় দুই মাস জমি ফাঁকা পরে থাকে। এসময় কাটা ধানের মুড়ি/নাড়া খেয়ে ফেলে গবাদিপশু। এই মুড়ির গোছা যত্ন করলে যে আবার ধান পাওয়া যায় সেই পরীক্ষায় সফল হয়েছে কুড়িগ্রামের কৃষক। একদিকে যেখানে আমন ধানের প্রস্তুতি নিচ্ছে কৃষক সেখানে জেলাসহ রাজারহাট উপজেলায় পরিত্যক্ত কাটা বোরো ক্ষেতের মুড়ি/নাড়া বা ধানের রেটুন পরিচর্চা করে দ্বিতীয়দফা আবার ধান উৎপাদন করে চমক সৃষ্টি হয়েছে। ফলে পূণরায় ফসল পেয়ে খুশি কৃষক। এসব ফেলে রাখা জমির মুড়ি বা রেটুনে ধান কাটার ৭ থেকে ১০দিনের মধ্যে বিঘা প্রতি ৭ কেজি ইউরিয়া, ৫ কেজি ডিএপি ও ৫ কেজি এমওপি প্রয়োগ করতে হয়। জমিতে ২ থেকে ৩ ইঞ্চি বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে হয়। জমিতে গরু ছাগলের বিচরণ বন্ধ ও আগাছা পরিস্কার রাখলে ৪৫ থেকে ৫০ দিনের মধ্যে পূণরায় ওই মুড়ি থেকে ধান পাওয়া যায়। কৃষি বিভাগের পরামর্শে পরীক্ষামূলকভাবে পূণরায় ধান উৎপাদন করতে পেরে খুশি কৃষক। রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের মুসরৎ নাকেন্দা গ্রামে ধান কর্তন দেখতে আসা বিভিন্ন এলাকার কৃষকগণ এই পদ্ধতি আগামিতে ব্যবহার করবেন বলে জানান।
কুড়িগ্রামের রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙ্গার কৃষকরা জানান, প্রথমবারের মত আমরা বোরো ধান উৎপাদনের পর জমিতে পরে থাকা মুড়ি/নাড়া বা রেটুন থেকে পূণরায় ধান উৎপাদনের জন্য কৃষককে পরামর্শ দিয়েছি। এবার এই উপজেলায় ২৫ একর জমিতে রেটুনের ক্রপ করা হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে ২৮ ধানের রেটুন থেকে উৎপাদিত ধান ক্রপ কাটিং করে একরে প্রায় ১৭মন করে ধান পেয়েছি।
উপজেলা কৃষি অফিসার, রাজারহাট, কুড়িগ্রাম সম্পা আকতার, জানান পরীক্ষামুলকভাবে এ চাষে কৃষকরা সফলতা পাওয়ায় আমরাও আশাবাদি। এ এলাকার জমিগুলোতে মাত্র ১ বার ফসল ফলে বাকি সময়গুলো জমি পড়ে থাকে। এখন রেটুন পদ্ধতিতে একদিকে মুড়িধান হচ্ছে অন্যদিকে কৃষকরা এই জমিগুলোতে মাছ চাষ করা যাচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুড়িগ্রাম উপপরিচালক মো. মঞ্জুরুল হক বলেন, বোরা ধান কাটার পর ৬০ থেকে ৭০ দিন জমি পরে থাকে। বিশেষ করে ২৮ ধানের মুড়ি থেকে পূনরায় কুশি হতে দেখা যায়। সেই চিন্তা থেকে এবার জমিতে ফেলে রাখা ২৮ ধানের মুড়ি পরিচর্চা করে পূণরায় ধান পেয়ে খুশি কুড়িগ্রামের কৃষক।
আগামীতে এ পদ্ধতিতে আরো কৃষক চাষাবাদ করে ফসলের ঘাটতি মেটাবে বলে প্রত্যাশা সংশ্লিষ্ট কৃষিবিভাগের।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন