কুড়িগ্রামে নদী বিচ্ছিন্ন সীমান্তবর্তী একটি গ্রামেই ৬ শতাধিক মৌচাক

আবহমান গ্রাম বাংলার বড় বড় লিচু গাছ কিংবা আমগাছে কিংবা অট্টালিকার কার্নিশে দু চারটে মৌচাক দেখা যায়। কিন্তু একইস্থানে শত শত মৌচাক এ যেন অবিশ্বাস্য ব্যাপার। আর এ বিম্ময়ের মূল কেন্দ্রবিন্দু কুড়িগ্রামে নদী বিচ্ছিন ভারত সীমান্ত ঘেষাœ একটি গ্রামের। এ গ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,বাড়ি এবং বিভিন্ন গাছে রয়েছে প্রায় ৬শতাধিক মৌচাক।

ফলে একদিকে যেমন মানুষজন পুলকিত হচ্ছেন অন্যদিকে আতংক বিরাজ করছে গ্রামটিতে। একদিকে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে পাঠদান কার্যক্রম অন্যদিকে এলাকাবাসী চলাচল করছেন ভয়ে ভয়ে।

কুড়িগ্রামের কচাকাটা থানার অধিন নদী বিচ্ছিন্ন নারায়ণপুর ইউনিয়নের সীমান্তঘেষা গ্রাম চৌদ্দঘড়ি। ভারতসীমান্তঘেষা এ গ্রামের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চারপাশের কার্ণিশ, জানালার সানসেট, বারান্দাসহ ছাদে অসংখ্য মৌমাছি মৌচাক বেধেছে। বাদ যায়নি ভবনের চারপাশের গাছপালাও। শিমুল,কাঁঠাল,আমসহ ছোট-বড় নারিকেলগাছের ডালে ডালে ঝুলে আছে ছোট বড় অসংখ্য মৌচাক। প্রতিবছর নভেম্বর মাসে আসতে শুরু করে এসব মৌমাছি। স্বল্প সংখ্যায় বাসা বাধে বিদ্যালয়ের ভবনে। কিন্তু চলতি বছর মৌচাকের সংখ্যা বহুগুণ বেড়েছে।

স্থানীয়দের ধারনা এবার তিন থেকে সাড়ে তিনশ চাক রয়েছে বিদ্যালয়টি ঘিরে। মৌমাছির ভয়ে বিদ্যালয়ে আসেনা শিক্ষার্থী। পথচারীদেরও মাঝেও বিরাজ করছে আতংক। সবসময় মৌমাছির হুল ফোটানোর ভয়ে থাকেন তারা।

বিনাপয়সায় আবাদকৃত মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করে লাভবান হলেও ক্ষতির মুখে পড়েছে শিক্ষার্থীরা ও শিক্ষকরা। স্থানীয় অভিভাবকরা জানান,অনেকে মধু সংগ্রহ করে লাভবান হলেও আমাদের ছেলেমেয়েদের পড়াশুনা বিঘ্ন ঘটছে। নতুন বছরের কয়েকমাস যে কি হবে তা স্যাররা ভালো জানে বলে জানান তারা।

নারায়নপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মোঃ-হাবিবুর রহমান জানান,শুধু বিদ্যালয়ে নয় গ্রামের বেশকিছু বাড়িতেও বসেছে মৌমাছির চাক।বিশেষ করে শিমুলগাছে। সবমিলিয়ে চৌদ্দঘড়ি গ্রামটিতে প্রায় ৬শতাধিক মৌচাক বসেছে।
চৌদ্দঘুড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক মিন্টু চন্দ্র দাস জানা,প্রতিবছর নভেম্বর থেকে ফেব্রæয়ারী মাস পর্যন্ত মৌমাছির আতংক থাকে বিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্টদের। পাশাপশি আতংকে থাকেন স্থানীয়রাও। তবে দীর্ঘদিন থেকে এমন আতংক বিরাজ করলেও মৌচাক কেউ নষ্ট করেন না।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপএরর উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান,বিদ্যালয়টির চারপাশের চরাঞ্চলে এবার ব্যাপক সরিষার চাষ হয়েছে। এসব সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতেই মৌমাছির আগমণ। এসব চাক থেকে মধু সংগ্রহ করে লাভবান হচ্ছেন স্থানীয়রা বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
অনেকে মন্তব্য করেন,আতঙ্কিত হবার কিছু নেই মৌমাছি যেমন দলবেধে এসেছে তেমনি একসময় দলবেঁধে আবার অনত্র চলে যাবে।