কোটা আন্দোলনের তিন নেতাকে তুলে নেয়ার অভিযোগ
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খাঁনসহ তিনজনকে তুলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে গোয়েন্দাদের বিরুদ্ধে। অন্য দুজন হলেন- মাহফুজ খান ও সুমন কবীর। তারাও সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক।
স্বজন এবং সহপাঠীদের অভিযোগ, রবিবার দুপুরে মিরপুর ১৪ নম্বরের ভাসানটেক বাজার এলাকার মজুমদার রোডের ১৪ নম্বর বাসা থেকে তাদেরকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি। তবে এখনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা এই বিষয়টি নিয়ে কিছু জানায়নি।
রাশেদ খানের স্ত্রী রাবেয়া আলো বলেছেন, ‘রাশেদকে ডিবি পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তুলে নিয়ে গেছে বাসা থেকে। এ সময় তাকে অনেক মেরেছে।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে থানায় জিডি করতে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন জানান, দুপুর ১২টার পর মিরপুরে রাশেদের বাসা থেকে তাদের তিনজনকে তুলে নিয়ে গেছে ডিবি পুলিশ।
সরকারি চাকরিতে কোটা ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে পরিষদের আন্দোলনের মুখে গত ১১ এপ্রিল প্রধানমত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন কোটা থাকবে না। এরপর গত ২ মে এবং সবশেষ গত ২৭ জুন সংসদে একই কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।
সরকার প্রধানের পক্ষ থেকে বারবার ঘোষণা আসলেও আন্দোলনকারীরা সম্প্রতি অস্থির হয়ে উঠেছে প্রজ্ঞাপনের দাবিতে। এর মধ্যে রাশেদ খাঁন সম্প্রতি ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় শিক্ষার্থীদেরকে বাড়ি থেকে ঢাকায় ফিরে আবার আন্দোলনে নামার আহ্বান জানান। তিনি তার বক্তব্যে বেশ কিছু জায়গায় আপত্তিকর শব্দও ব্যবহার করেন। বলেন, ‘দেশ তোমার বাপের না যে যা খুশি তাই বলবে।’
এরপর কর্মসূচি ঘোষণা করতে শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলন ডাকে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। কিন্তু সেখানে আগ মুহূর্তে হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নরুল হক নূরসহ সাত শিক্ষার্থীকে পেটায় তারা।
এর আগেই আত্মগোপনে যান রাশেদ খান। এর মধ্যে রবিবার তিনি তার ফেসবুক আইডি থেকে আবারও একটি ভিডিও বার্তা প্রচার করেন। এতে তিনি ভাসানটেক এলাকার একটি বাড়িতে থাকার কথা জানিয়ে বলেন, ডিবি পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা যেন রাস্তায় নেমে আসে।
শনিবারের হামলার পর রবিবার সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবরোধের ডাক দেয় কোটা আন্দোলনকারীরা। পরে কর্মসূচি পাল্টে মানববন্ধনের কথা জানায় তারা। তবে আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হওয়ার কারণে এটি কর্মসূচির বাইরে ছিল।
অন্যত্রও বাধার মুখে পড়েছে মানববন্ধন কর্মসূচি। সকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ পণ্ড করে দেয় মানববন্ধন। এরপর সোয়া এগারোটার দিকে আবারও শিক্ষার্থীরা গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হলে তাদেরকে ধাওয়া দেয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
চট্টগ্রামে ষোলশহরে কর্মসূচি পালনের কথা ছিল কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের। কিন্তু সেখানেও আগে থেকেই সেখানে অবস্থান নেয় বিরোধীরা।
সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও কর্মসূচি করতে পারেনি আন্দোলনকারীরা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন