কোটা ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে সিদ্ধান্ত ৭ মে : কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিগুলোর যৌক্তিকতা ইতিবাচক। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আগামী ৭ মে’র মধ্যে কোটা সংস্কার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে সরকার। অার এই সময় পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা তাদের আন্দোলন স্থগিত রাখবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সেতুমন্ত্রী এ কথা জানান।

সোমবার যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কনফারেন্স রুমে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এ বৈঠক শুরু হয়। শেষ হয় ৬টা ১৮ মিনিটে।

কাদের বলেন, ‘বিরাজমান কোটা পদ্ধতি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রধানমন্ত্রী আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরপরই বিশেষ বৈঠকে নির্দেশ দিয়েছেন। তাই আমি আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করেছি। তাদের দাবিগুলোর যৌক্তিকতা আমরা ইতিবাচকভাবে দেখব। আগামী মে মাসের ৭ তরিখের মধ্যে সরকার বর্তমান কোটাব্যবস্থার যে রিভিউ বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে এর রেজাল্টটা কী দাঁড়ায় সেটা আমরা জানিয়ে দেব।

তিনি বলেন, যেসব তরুণরা কোটা সংস্কারের আন্দোলন করছেন তারা ফার্স্টটাইম ভোটার, নতুন জেনারেশন, এরা রাজনীতির অংশ, এদের ব্যাপারে আমাদের একটা দুর্বলতা অবশ্যই আছে। কারণ আমরা রাজনীতিটা শুধু পরবর্তী নির্বাচনের জন্য করি না। আমরা রাজনীতি করি, উন্নয়ন করি, পরবর্তী জেনারেশনের জন্য। কাজেই পরবর্তী জেনারেশনের সুবিধা-অসুবিধা আমরা বুঝবার চেষ্টা করি। শেখ হাসিনার সরকার তরুণদের কোনো দাবি যদি যৌক্তিক হয় তাহলে তা উপেক্ষা করে না।

তিনি বলেন, সেজন্যই প্রধানমন্ত্রী আমাকে কিছু মেসেজ দিয়ে আন্দোলনকরীদের সঙ্গে বৈঠক করতে বলেছেন। আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে ২০ জন এখানে এসেছেন। তাদের মধ্য থেকে ৫ জনের বক্তব্য শোনা হয়েছে। আরও কেউ বলবেন কি না সেটাও জানতে চাওয়া হয়। আমরা তাদের কথা মুগ্ধ হয়ে শুনেছি।

এখানে তারা তাদের চলমান আন্দোলন স্থগিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আন্দোলনে অনেক সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের পড়ে বিষয়টিও তাদের বুঝিয়েছি।

বৈঠকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এনামুল হক শামীম, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, মুক্তযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

আর পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনের নেতৃত্বে বৈঠকে পরিষদের ১৯ সদস্য অংশ নেন। তাদের মধ্যে কানিজ ফাতেমা, আফসানা সাফা, একরামুল হক, আল ইমরান হোসাইন, লীনা মিত্র, আরজিনা হাসান, লুবনা জাহান প্রমুখ ছিলেন।

কোটা সংস্কারে তাদের পাঁচ দফা দাবি হলো-কোটা ব্যবস্থা সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা, কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ না দেয়া, চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহারের সুযোগ না দেয়া, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সবার জন্য অভিন্ন কাট মার্কস ও বয়সসীমা নির্ধারণ করা ও কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধায় নিয়োগ প্রদান করা।