কোনো দলের ওপর ক্ষোভ নেই, ক্ষমা করে দিলাম: ডা. শফিকুর রহমান
কোনো রাজনৈতিক দলের ওপর ক্ষোভ নেই জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, সর্বশেষ জামায়াতকে যে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, সেটা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিনি বলেন, মানুষকে ডাইভার্ড করতে এটা করা হয়েছিল। রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের কারও প্রতি কোনো ক্ষোভ নেই। আমরা ক্ষমা করে দিলাম।
কিন্তু ন্যায়বিচারের স্বার্থে যারা সুনির্দিষ্ট অপরাধী তাদের শাস্তি পেতে হবে। যাতে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি না হয়। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। এ সময় দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। জামায়াত আমির বলেন, অতীতে জাতিকে হাত-পা বেঁধে আটকে রাখা হয়েছিল; কথা বলতে দেওয়া হয়নি। সাংবাদিকরাও চাইলে সত্য বলতে পারেননি। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘এখন সেই সময় নেই, পরিবর্তন হয়েছে।
আসুন, সমাজের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় স্বার্থে এক হই। আপনাদের (সাংবাদিকদের) কলম মুক্ত হোক, চিন্তা স্বাধীন হোক। আপনারা যাতে নির্ভয়ে দায়িত্ব পালন করতে পারেন সেই ব্যবস্থা করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। জামায়াতের আমির বলেন, আমাদের দলের হয়ে আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি আমরা যদি ক্ষমতায় আসি তবে সাংবাদিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দেব; ধর্মের ভিত্তিতে কোনো মূল্যায়ন করা হবে না। সংখ্যালঘু শব্দটা দিয়ে সমাজকে বিভক্তি করা হচ্ছে, আমরা তার পক্ষে নয়।
এই সংস্কৃতি উঠে যাক এটা আমরা চাই। বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা আমাদের সাহায্য করুন; কিন্তু বাধ্য করবেন না। দেশের কোনো সিদ্ধান্ত দেশের মানুষই নেবে। সমাজ থেকে ভয়ের সংস্কৃতি দূর হবে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করে জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, শাসক যেন সমাজের কাউকেই দাস মনে না করে এমন সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। জামায়াতের ভুলগুলো ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী অনেক আগে থেকেই গণমানুষের দল হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার হামলা, মামলা, নির্যাতন করেছে। কিন্তু সেই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছে।
জামায়াত আবারও দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারছে। মানুষও জামায়াতকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করছে। কিন্তু আমাদের এই পথচলায় যদি কোনো ভুল হয়ে থাকে তাহলে আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে, আপনারা তা আমাদের ধরিয়ে দেবেন; আমাদের সমালোচনা করবেন।
ডা. শফিকুর রহমান কথা বলেন নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতেও। অধিকার নিশ্চিতের জন্য কাজ করার সময়ই দলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনের ইস্যু পরিবর্তন করার জন্য সরকার আমাদের নিষিদ্ধের এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ছাত্র আন্দোলন চাপা দেওয়ার জন্য আমাদের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। তবে আমাদের কোনো রাজনৈতিক দলের ওপর ক্ষোভ নেই; আমরা ক্ষমা করে দিলাম। কিন্তু যেসব ব্যক্তি অপরাধ করেছে, তাদের শাস্তি পেতে হবে।
জামায়াতের আমির বলেন, সরকার পতনের আন্দোলন শুধু ছাত্রদের নয়; এতে রাজনৈতিক দলগুলোও ছিল, সাধারণ মানুষও ছিল। রাজনৈতিক দলগুলোর ১৫ বছরের আন্দোলন এবং ১৫ বছরের নির্যাতনের প্রতিফলন হয়েছে। তবে অবশ্যই ছাত্রদের কৃতিত্ব দিতে হবে। তারা আমাদের প্রতিপক্ষ নয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন