খাগড়াছড়ি সুস্বাদু আম উৎপাদনের ‘নতুন রাজধানী

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সুস্বাদু আম উৎপাদনের ‘নতুন রাজধানী’ এখন পাহাড় ও সমতলে সুনাম খ্যাতি অর্জন করেছে। জেলার ৯টি উপজেলাতে বাড়ছে আম অর্থনীতির পরিধি।

প্রতিবছরই বাড়ছে বাগানের সংখ্যা। অনুকূল আবহাওয়া ও পাহাড়ের মাটি আম চাষের উপযোগী হওয়ায় বাড়ছে চাষের পরিমাণ। জেলায় ছোট-বড় আম বাগানের সংখ্যা প্রায় ১০হাজার। আর এ খাতে জড়িত অন্তত ২০হাজার মানুষ। আম উৎপাদনের ‘নতুন রাজধানী’ এখন খাগড়াছড়ি সমারোহ।

চলতি মৌসুমে তিন হাজার ৭৯৩হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। পাহাড় জুড়ে হেক্টর প্রতি উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ১২টন। সে হিসেবে উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ৪৫হাজার ৫২০মেট্রিক টন, যার বাজার মূল্য প্রায় দুই হাজার ২৭৫কোটি টাকা। জেলার ৯টি উপজেলায় আম চাষিদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। খাগড়াছড়ি জেলা সদর, দীঘিনালা, মাটিরাঙা, গুইমারা, মহালছড়ি, রামগড়, মানিকছড়ি, লক্ষাছড়ি, পানছড়িসহ সবখানেই বাড়ছে আমের আবাদ।

জেলা সদরের কমলছড়ি ইউনিয়নের ভুয়াছড়ি সড়কের পাশে আমের বাগান গড়ে তুলেছেন কৃষক মংশিতু চৌধুরী। প্রায় ৩০একর পাহাড়ের টিলা ভূমিতে আমের বাগান করেন তিনি। বাগানে অন্তত চার হাজার গাছে আমের ফলন এসেছে। চলতি মৌসুমে আমের উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ৫০ থেকে ৬০টন বলে জানিয়েছেন এ কৃষক। খাগড়াছড়ির সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের জোরমরম ও বানছড়া এলাকায় চাষির সংখ্যা প্রায় ১৫০জন। পুরো এলাকায় আম চাষ করা হয়েছে।
সুজন চাকমা ২০০৭ সালে এ এলাকায় প্রথম বাগান গড়ে তোলেন। বর্তমানে ভাইবোনছড়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চলমান চেয়ারম্যান। কৃষিজাত ও বাগান সৃজনে অবদান¯ স্বরূপ প্রধানমন্ত্রী কৃষি পদক পেয়ে স্থানীয় সংসদ থেকে শুরু করে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী, কৃষি মন্ত্রী পর্যন্ত ভাল সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। যা জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক পর্যায় ভূয়সী প্রশংসনীয় হয়েছে। ২০একর পাহাড়ি টিলায় তিনি দুই হাজার আমের চারা রোপণ করেছেন তিনি। চলতি মৌসুমে তার আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১০০টন, যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০লাখ টাকা।

এ কৃষক ও জনপ্রতিনিধি আরও বলেন, ‘কীটনাশক ও শ্রমিক মজুরি বাবদ ব্যয় হয়েছে ১৫লাখ টাকা। উৎপাদন খরচ বাদ দেওয়ার পরও ৩৫লাখ টাকার মতো লাভ হবে। জেলায় এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৪৫হাজার ৫২০মেট্রিক টন, যার বাজার মূল্য প্রায় দুই হাজার ২৭৫কোটি টাকা। মৌসুমের শুরুর দিকে প্রতি কেজি আম বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০টাকায়। আমরুপালি , রাংগুউই, বারি-৪সহ বিভিন্ন জাতের আম চাষ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে কৃষক আম বিক্রি করে লাভবান হবেন।