খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় সেনা অভিযানে অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলায় সেনা অভিযানে অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। জেলার মাটিরাঙ্গায় বিশেষ সেনা অভিযানে দেশী তৈরী অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে মাটিরাঙ্গায় সেনাবাহিনীর তল্লাশি, নারী-শিশুসহ কলইচান ত্রিপুরার বাড়ির সবাইকে নির্যাতনের অভিযোগ করেছে।
সোমবার(২০শে অক্টোবর) জোনের আওতাধীন দলধলিপাড়া এলাকা হতে এসব উদ্ধার করা হয়। দুপুর বেলায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জোন অধিনায়ক লে: কর্ণেল ইব্রাহিম আধাম।
তিনি জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ১৮ফিল্ড রেজি: আর্টিলারী মাটিরাঙ্গা জোন কর্তৃক গভীর রাতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। সেনা অভিযানের উপস্থিতি জানতে পেরে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। অভিযানে ২টি বাড়ি ও বাড়ি সংলগ্ন এলাকা তল্লাশি করে ১টি দেশীয় তৈরি এক নালা বন্দুক, ৪রাউন্ড কার্তুজ ১টি ওয়াকিটকি ও ৫টি পাহাড়ি দা জব্দ করার হয়। পরবর্তীতে উদ্ধারকৃত অস্ত্র, গোলাবারুদ ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
মাটিরাঙ্গা জোন অধিনায়ক লে: কর্ণেল ইব্রাহিম আধাম আরো বলেন, দেশের শান্তি শৃঙ্খলা ও যে কোন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ মোকাবেলায় সেনাবাহিনী তৎপর রয়েছে। সন্ত্রাসী কার্যক্রম রোধে আগামীতেও এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
এদিকে জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বীরেন্দ্র কার্বারি পাড়ায় সেনাবাহিনী এক ব্যক্তির বাড়িতে তল্লাশির সময় বাড়ির নারী-শিশুসহ সবাইকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে বলে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনার বিবরনে জানা যায়, সোমবার(২০শে অক্টোবর) ভোর রাত ২টার সময় মাটিরাঙ্গা জোনভুক্ত ব্যাঙমারা আর্মি ক্যাম্প থেকে ২০জনের একদল সেনা সদস্য বীরেন্দ্র কার্বারি পাড়ায় হানা দেয়। এ সময় সেনারা প্রথমে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
পরে সেনারা কোন ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রামের বাসিন্দা কলইচান ত্রিপুরার বাড়ির দরজা লাথি মেরে ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং সবাইকে ঘুম থেকে জাগিয়ে বাড়ির বাইরে বের করে দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখে।
এরপর সেনারা বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ঘরে থাকা সব জিনিসপত্র তছনছ করে দেয়।
সেনারা বাড়ির মালিক কলইচান ত্রিপুরা, তার স্ত্রী ও ২সন্তানকে(একজন হাইস্কুলের ও আরেকজন প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র) শারীরিক নির্যাতন করেছে বলে ভুক্তভোগী পরিবারটি জানিয়েছে।
তাদের মধ্যে কলইচান ত্রিপুরাকে বেশি নির্যাতন করা হয়। তার নাক দিয়ে রক্ত বের হয়।
সেনারা এক ঘন্টা ধরে সেখানে অবস্থান করে। পরে ভোর রাত ৩টার দিকে সেখান থেকে ক্যাম্পে ফিরে যায় বলে জানা গেছে।
অপরদিকে, গুইমারা উপজেলার হাফছড়ি ইউনিয়নে ৮নং ওয়ার্ডে বরইতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬০জনের একটি সেনাদল গতকাল(১৯শে অক্টোবর) দুপুর থেকে অবস্থান করছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এর ২দিন আগেও ওই এলাকায় প্রায় ১০০সেনা মোতায়েন ছিল।
সেনাদের অবস্থানের কারণে বরইতলীসহ আশেপাশের গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে ইউপিডিএফ খোঁজার নাম করে মাটিরাঙ্গা, গুইমারা ও রামগড় উপজেলায় সেনা অভিযান, সেনা টহল বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
প্রতিদিন সেনা অভিযানের ফলে এলাকার সচেতন জনমনে আতঙ্ক ও উদ্বেগের পাশাপাশি চরম ক্ষোভও বিরাজ করছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন




















