খাগড়াছড়িতে তামাক নয়, ভুট্টাচাষে জীবন ফেরাতে চান কৃষকরা

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার ৯টি উপজেলাতে তামাক নয়, ভুট্টা চাষে জীবন ফেরাতে চান সাধারন কৃষকরা। সারি সারি সবুজ গাছ। মাটি থেকে বের হয়ে দুলছে বাতাসে। পাশেই সে দৃশ্য দেখে আনন্দে মন ভরে উঠছিল রমজান আলীর। এবার ভালো ফলন হয়েছে। অনেক পরিশ্রম করেছেন। তবুও কোথায় যেন শংকা এই কৃষকের মত অনেকের। করোনা পরিস্থিতি এমনই দুশচিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে খাগড়াছড়ির ভুট্টা চাষিদের। স্থানীয় দীঘিনালায় তামাকের বিকল্প হিসেবে ভুট্টার চাষ করেছিলেন চাষিরা। তবে বাজারজাতকরণে নানা জটিলতার কারণে দিন দিন ভুট্টার চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন তারা।

চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুনরায় ভুট্টার পরিবর্তে জমিতে তামাক চাষ শুরু করেছেন। তামাক কোম্পানিগুলো প্রতিনিয়ত প্রণোদনা, সার বীজ, আগ্রিম দাদন ও বাজারজাতে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন চাষিদের। এতে চাষিরা ভুট্টার বদলে তামাক চাষের দিকে ঝুঁকছেন।

গত বছর ভুট্টা চাষ হয়েছিল উপজেলার ছোট মেরুং ও কবাখালীতে। তবে এ বছর সেসব জমিতে হুলস্থুলভাবে ভুট্টার বদলে তামাকের চাষ করছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ তথ্যমতে, চাষিদের মাঝে বিনামূল্যে সার, বীজ, কীটনাশক ও প্রণোদনা প্রদান করা হচ্ছে।

গত বছরের তুলনায় এ বছর ভুট্টা চাষ কিছুটা কমেছে। গত বছর উপজেলায় ১৪৫হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছিল এবং এ বছর ১৪০হেক্টর জমিতে উন্নতমানের ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। পাশাপাশি বাজারজাতের নিশ্চয়তা না পেয়ে এ বছর কিছুটা ভুট্টা চাষ কমেছে।

তামাক চাষি রমজান আলী বলেন, ‘আমি তামাক ছেড়ে গত বছর ভুট্টার চাষ করেছিলাম। তবে বাজারজাতের নিশ্চয়তা না পেয়ে ভুট্টা ছেড়ে এ বছর আবার তামাক চাষ শুরু করছি। ভুট্টা চাষে খরচ কম লাভ বেশি হলেও একমাত্র বাজারজাতের সুবিধা না থাকায় গত বছর আমিসহ প্রত্যেক ভুট্টা চাষিকে লোকসান দিতে হয়েছে।’

তামাক চাষি আইয়ুব আলী বলেন, তামাক উৎপাদনে আমাদের নানা প্রণোদনা ও বাজারজাতের নিশ্চয়তা প্রদান করে। তাই আমরা তামাকের দিকে ঝুঁকছি। তবে তামাক কোম্পানিগুলোর মতো যদি কৃষি বিভাগ সর্বদা মনিটরিং ও বাজারজাতের নিশ্চয়তা প্রদান করে তাহলে তামাক চাষ ছেড়ে দিবো।

এ বিষয়ে দীঘিনালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওস্কার বিশ্বাস বলেন, দীঘিনালা উপজেলায় গত বছরের তুলনায় এ বছর ভুট্টা চাষ কিছুটা কমেছে। দানাদার খাদ্য হিসেবে ভুট্টা চাষে কৃষকদের বাড়তি আগ্রহ রয়েছে, অধিক লাভবান হওয়ায় ধান ও তামাক চাষের চেয়ে ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন দীঘিনালার স্থানীয় কৃষকরা। তবে গত বছর ভাল ফলন হওয়া সত্ত্বেও ন্যায্য দাম ও বাজারজাত করেতে না পেয়ে এ বছর কিছু চাষি ভুট্টা ছেড়ে পুনরায় তামাক চাষ করেছেন।