‘খালেদাকে জোর করে প্যারোল দেয়ার মতো বিপদে পড়েনি সরকার’
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘সরকার এমন কোনো বেকায়দায় নেই যে আদালতে দণ্ডিত বেগম খালেদা জিয়াকে যেকোনো উপায়ে মুক্তি দিতে হবে।’
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে তিন দিনব্যাপী ‘রূপসী বাংলা জাতীয় ফটো প্রদর্শনী ১৪২৬’ উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিনিময়ে বিএনপি নেতাদের সংসদে যোগ দেবার বিএনপির দেওয়া শর্তের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া আদালতে দণ্ডিত হয়ে কারাগারে আছেন। আদালতে জামিন পাওয়াই তার মুক্তির পথ। আর প্যারোলের বিষয়টি হচ্ছে, দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিজে চাইলেই কেবল তা বিবেচনার সুযোগ থাকে। কাউকে তো জোর করে প্যারোল দেওয়া যায় না। বিএনপি নেতারা কেনো অবান্তর কথা বলেন, তা বোধগম্য নয়।’
সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত বিএনপির নেতাদের সংসদে যোগ দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যারা তাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে, তারা সংসদে তাদের কথা বলার জন্যই করেছে, সংসদে না যাবার জন্য নয়। সুতরাং শপথ নেওয়া তাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য। এবং আমি মনে করি, তারা সে দায়িত্ব পালন করবেন, কারণ তাতে বিএনপিরই মঙ্গল। এখন তারা রাজপথে যে কথা বলছেন, সেটা তারা সংসদে গিয়ে বলার সুযোগ পাবেন। আমি তাদের আহ্বান জানাবো সংসদে যোগ দেবার জন্য।’
সরকার বেকায়দায় নেই যে খালেদাকে যেকোনোভাবে মুক্তি দিতে হবে: তথ্যমন্ত্রী
‘কোনো শর্তের কারণে বিএনপি সংসদে যোগ দেবে এমন কোনো বিষয়ই নেই’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারা নির্বাচিত হয়েছেন যোগ দেবার জন্যে, সেটি না করে, শপথ না নিয়ে, ভোটদাতাদের অবজ্ঞা করা অনুচিত বলেই আমি মনে করি।’
শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় ‘বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন’ আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ তার জীবনের অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে বলেন, ‘দলীয় কাজে তথ্যচিত্র নির্মাণ করার সময় জনগণের ওপর বিএনপি’র পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ ও নানা অত্যাচারের সাক্ষী আলোকচিত্রগুলো আমাকে বহুবার কাঁদিয়েছে, আবেগাপ্লুত করেছে। ফটোসাংবাদিকরাই এর মূল, তারাই কালের সাক্ষ্য ধারণ করে রাখেন।’
মন্ত্রী এ সময় প্রদর্শনীর শিরোনাম ‘রূপসী বাংলা’র প্রশংসা করে বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো এমন স্নিগ্ধ প্রকৃতি খুব কম দেশেই আছে।’ সেইসাথে তিনি বলেন, ‘আলোকচিত্র মানুষের তৃতীয় নয়ন খুলে দিতে পারে, সংবাদকে পূর্ণতা দিতে পারে এমনকি একটি আলোকচিত্র নিজেই হয়ে উঠতে পারে সংবাদ।’
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এ প্রদর্শনী আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে আলোকচিত্র সাংবাদিকতার বিকাশের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভাশেষে তিন প্রয়াত প্রখ্যাত ফটোসাংবাদিক মোশাররফ হোসেন লাল, এস এম মোজাম্মিল হোসেন ও আলহাজ্ব মোহাম্মদ জহিরুল হকের মরণোত্তর সম্মাননা তাদের পরিবারের হাতে তুলে দেন মন্ত্রী।
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তৃতা করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, শিল্পকলা একাডেমির সচিব ড. কাজী আসাদুজ্জামান, ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা ও সাধারণ সম্পাদক কাজল হাজরা।
এবারের রূপসী বাংলা আলোকচিত্র প্রদর্শনীর প্রতিযোগিতায় আব্দুল্লাহ অপু, জাকির হোসেন চৌধুরী ও সোহেল আহমেদ যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার অর্জন করেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন